তীব্র খাদ্য সংকটের মুখে ৮৩ লাখ সোমালিয়ান
সোমালিয়ায় ৮৩ লাখ মানুষ তীব্র খাদ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। আগামী বছরের এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে এই সংকট সবথেকে ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে। এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে জাতিসংঘ এবং অন্য মানবাধিকার সংস্থাগুলো। এছাড়া কয়েকটি অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ হানা দিতে যাচ্ছে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
খবরে জানানো হয়, আফ্রিকার এই দরিদ্র দেশটিতে গত কয়েক বছর ধরেই বৃষ্টি কমে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে খাদ্য উৎপাদনে। ফলে দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে যে পরিমাণ উৎপাদন প্রয়োজন তা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। জাতিসংঘ বলছে, গত পাঁচ বছর ধরে একটানা অপর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী বছরও বৃষ্টি কম হবে বলে আশঙ্কা রয়েছে। আর এটিই সোমালিয়ায় এই ‘অভূতপূর্ব’ সংকট সৃষ্টি করেছে। এর ফলে দেশটিতে আগামী বছর অস্বাভাবিকভাবে খাবারের মূল্য বেড়ে যাবে। এতে অনাহারে থাকতে হবে ৮৩ লাখ মানুষকে। এরমধ্যে সোমালিয়ার দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যের প্রশাসনিক রাজধানী বাইদোয়া এবং বুরকাহাবা শহরে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। সম্ভবত এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হতে পারে এ অঞ্চল।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) অনুসারে, এই অঞ্চলগুলোর মানুষেরা এরইমধ্যে ব্যাপক মাত্রায় অপুষ্টিতে ভুগছে। ত্রাণ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর হিসেবে, সোমালিয়ায় ১৮ লাখ শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। ২০২৩ সালে এই সংখ্যা আরও দ্রুত বাড়তে থাকবে। জাতিসংঘ বলেছে, সোমালিয়ার সবথেকে ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের কাছে এখনও ত্রাণ পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। আগামী বছর যদি সেসব অঞ্চলে বৃষ্টিপাত না হয় তাহলে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে যথেষ্ট ফসল উৎপাদন সম্ভব হবে না।
দুর্ভিক্ষের এই উচ্চতর ঝুঁকির সম্মুখীন এলাকাগুলির মধ্যে রয়েছে কেন্দ্রীয় প্রদেশ হিরান, ইথিওপিয়ার সীমান্তবর্তী শহর গারোয়ে, গালকাসিও এবং ডলোতে বাস্তুচ্যুত মানুষের বসতি। সোমালিয়া বর্তমানে তার সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ খরার সম্মুখীন হচ্ছে। এতে শুধু ফসল উৎপাদন কমে গেছে তাই নয়, লক্ষ লক্ষ গবাদি পশু প্রাণ হারিয়েছে। ফলে বাস্তচ্যুত হয়েছে কয়েক লাখ মানুষ। সোমালিয়ার সরকার খরার কারণে ‘জাতীয়জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছে এবং দুর্ভিক্ষ এড়াতে আন্তর্জাতিক সহায়তার আবেদন জানিয়েছে।