March 9, 2025
বৈদেশিক সহায়তা স্থগিত করা নিয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গেলো সুপ্রিম কোর্টের আদেশ: ডেমোক্র্যাটদের উল্লাস

বৈদেশিক সহায়তা স্থগিত করা নিয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গেলো সুপ্রিম কোর্টের আদেশ: ডেমোক্র্যাটদের উল্লাস

বৈদেশিক সহায়তা স্থগিত করা নিয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গেলো সুপ্রিম কোর্টের আদেশ: ডেমোক্র্যাটদের উল্লাস

বৈদেশিক সহায়তা স্থগিত করা নিয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গেলো সুপ্রিম কোর্টের আদেশ: ডেমোক্র্যাটদের উল্লাস

ইউ.এস. এইড বা ইউএসএআইডি:

আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, দুর্যোগ ত্রাণ, দারিদ্র্য বিমোচন, পরিবেশগত উন্নয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক বিষয় সহ বৈশ্বিক বিষয়গুলিতে প্রযুক্তিগত সহযোগিতার উদ্দেশ্যে কংগ্রেস ১৯৬১ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বৈদেশিক সহায়তা আইন প্রতিষ্ঠা করে, ইউ.এস. এইড বা ইউএসএআইডি (United States Agency International Development or USAID) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অধীনে একটি বেসামরিক বিদেশী সহায়তা সংস্থা। এটি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে পরিচালিত হয়।

বিদেশী সাহায্য বন্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে ইউএস  সুপ্রিম কোর্ট। গত মাসে, ইউএস জেলা জজ আমির আলী ট্রাম্প প্রশাসনকে সাময়িকভাবে বিদেশী সাহায্য অব্যাহত রাখার অনুমতি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এর বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের আপিলের প্রতিক্রিয়ায়, প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস ২৬শে ফেব্রুয়ারি আদেশটি সাময়িকভাবে স্থগিত করেন। তবে, বুধবার, সুপ্রিম কোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই ৯০ দিনের জন্য সমস্ত বিদেশী সাহায্য স্থগিতের নির্দেশ দেন। ইউএসএআইডির কার্যক্রম বন্ধের আদেশ বিশ্বব্যাপী জীবন রক্ষাকারী খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা সরবরাহ ব্যাহত করে। এর প্রভাব ইউএসএআইডিতে ব্যাপক ছাঁটাইয়ের উপরও পড়ে।

গত মাসে, জেলা জজ আমির আলী স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং ইউএসএআইডিকে ইতিমধ্যে সম্পন্ন ঠিকাদারদের জন্য অর্থ প্রদানের নির্দেশ দেন; সময়সীমা ছিল ২৬শে ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত।কিন্তু সময়সীমা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে ট্রাম্প প্রশাসন বলে যে এত অল্প সময়ের মধ্যে বিলটি সম্পন্ন করা অসম্ভব। এরপর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস একটি সংক্ষিপ্ত প্রশাসনিক স্থগিতাদেশ জারি করেন।

স্থগিতাদেশের পর, সুপ্রিম কোর্ট নিম্ন আদালতের আদেশ স্থগিত করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং ট্রাম্প প্রশাসনকে বকেয়া অর্থ পরিশোধের নির্দেশ দেয়। তবে, বিচারক আলির তাৎক্ষণিক অর্থ প্রদানের সময়সীমা ইতিমধ্যেই পেরিয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা আদালত জানায়নি।

রক্ষণশীল বিচারপতি স্যামুয়েল আলিটো, ক্ল্যারেন্স থমাস, নীল গোরসাচ এবং ব্রেট কাভানা সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সাথে ভিন্নমত পোষণ করেন। বিচারপতি আলিটো তিনজন রক্ষণশীল বিচারপতির সাথে ভিন্নমত পোষণ করে বলেন, “একজন জেলা আদালতের বিচারকের কি মার্কিন সরকারকে ২ বিলিয়ন ডলার দিতে বাধ্য করার ক্ষমতা আছে?” তিনি আরও বলেন, “এই প্রশ্নের উত্তর ‘না’ হওয়া উচিত, তবে এই আদালতের সংখ্যাগরিষ্ঠরা সম্ভবত অন্যটি  ভাবেন। তাই  আমি হতবাক”।

দুটি সাহায্য সংস্থা গত মাসে ট্রাম্পের ৯০ দিনের বৈদেশিক সাহায্য বন্ধের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে একটি মামলা দায়ের করে। এরপর কলম্বিয়া জেলার জেলা বিচারক আমির আলী ট্রাম্প প্রশাসনকে সাময়িকভাবে বৈদেশিক সাহায্য অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেন। মামলাটি এখনও বিচারাধীন এবং বৃহস্পতিবার আদালতে আরেকটি শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। ইউএসএআইডি সহায়তা অব্যাহত রাখার বিষয়টি সেখানে আলোচনা করা হবে।

ট্রাম্প প্রশাসন বৈদেশিক সাহায্য স্থগিত করার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি) কে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। এর হাজার হাজার কর্মচারী এবং ঠিকাদারকে ইতিমধ্যেই ছাঁটাই করা হয়েছে। অনেককে স্থগিত করা হয়েছে অথবা প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।

প্রতি বছর ইউএস  সরকারের পক্ষ থেকে ইউএসএআইডি বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক সাহায্য প্রদান করে। তবে, ট্রাম্প এবং সরকার দক্ষতা বিভাগের প্রধান এলন মাস্ক সংস্থাটিকে “অপ্রয়োজনীয় ব্যয়” বলে সমালোচনা করেছেন। মাস্ক ইউএসএআইডিকে “অপরাধমূলক সংস্থা” বলেও অভিহিত করেছেন।

এদিকে, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের রায় ডেমোক্র্যাটিক শিবিরে উল্লাস সৃষ্টি করেছে। ক্যাপিটল হিলের ডেমোক্র্যাটরা বলেছেন যে, সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রমাণ করে যে, বাজেট আটকানোর ক্ষমতা রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সীমাহীন নয়।

হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি গ্রেগরি মিকস বলেছেন যে, অর্থ ইতিমধ্যেই অনুমোদিত হয়েছে, কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। তাই সুপ্রিম কোর্ট সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন প্রশাসনের অর্থ ছেড়ে দেওয়া উচিত এবং প্রকল্পগুলি চালিয়ে যাওয়া উচিত।

কংগ্রেস প্রমিলা জয়পাল এটিকে “অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রায়” বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট দেখিয়েছে যে ট্রাম্প-নিযুক্ত বিচারকদের অধীনেও, কংগ্রেসের বাজেট বরাদ্দের ক্ষমতা রয়েছে এবং নির্ধারিত প্রকল্পগুলির কাজ শেষ হওয়ার পরে অর্থ প্রদান করতে হবে।

প্রমিলা জয়পাল আরও বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসন এই রায়কে সম্মান করবে কিনা তা আমি নিশ্চিত নই, তবে আমি আশা করি তারা সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত মেনে চলবে।”

আরও পড়তে

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X