১২টি দেশে টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, পড়তে যাচ্ছে ভয়ানক বিপদে
পদত্যাগকারী যুক্তরাজ্যের প্রাক্তন নগরমন্ত্রী পলাতক খুনি হাসিনার বোনজি টিউলিপ সিদ্দিক গুরুতর ভয়ানক বিপদে আছে। অর্থ পাচারের অভিযোগে বিশ্বের কমপক্ষে ১২টি দেশে তার এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এই তথ্য প্রকাশ করেছে। প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য টাইমসের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে।
তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে দুদকের একজন মুখপাত্র বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে আমরা দেখেছি যে যুক্তরাজ্য ছাড়াও বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার হয়েছে। আমাদের দল পারস্পরিক আইনি সহায়তা চেয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে তথ্য ও প্রমাণ চেয়েছে।”
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্তের অংশ হিসেবে ১০ থেকে ১২টি দেশ থেকে তথ্য চাওয়া হয়েছে। টিউলিপ সম্পর্কে কতটি দেশ থেকে তথ্য চাওয়া হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। ১২টি দেশে টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। টিউলিপের ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে!
মুখপাত্র বলেন, “আমাদের দল বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে কাজ করছে। যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন দেশ সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে।”
ইতিমধ্যে, ব্রিটেনের ‘এফবিআই’ নামে পরিচিত জাতীয় অপরাধ সংস্থা (এনসিএ) টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। তারা ঢাকায় বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (এসিসি) সাথে একটি গোপন বৈঠকও করেছে। দুদক তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা তদন্ত করছে। এগুলো হলো পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প থেকে লাভবান হওয়া, তার খালা,পলাতক হাসিনাকে পরিবারের সদস্যদের জন্য জমি বরাদ্দ করতে প্রভাবিত করা এবং অর্থ পাচারের অভিযোগ।
যদিও বরখাস্ত টিউলিপ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। আরও দাবি করা হচ্ছে যে, তার খালার রাজনৈতিক বিরোধীরা তাকে ফাঁসিয়েছে। তার একজন মুখপাত্র বলেছেন যে, অভিযোগের সমর্থনে কোনও প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। এমনকি তার সাথে যোগাযোগও করা হয়নি।
এর আগে, তথ্য উঠে আসে যে, রাজধানী ঢাকার একটি বিলাসবহুল ১০ তলা টাওয়ারের বাসিন্দা হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। সম্পত্তিটি তার পরিবারের নামে। যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ঢাকার কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন যে, ‘সিদ্দিকস’ নামে ঢাকার এই অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সটি ২০১৪ সালে টিউলিপের ‘স্থায়ী ঠিকানা’ ছিল। সেই সময় তিনি যুক্তরাজ্যের উত্তর লন্ডনের ক্যামডেনের কাউন্সিলর ছিলেন। অ্যাপার্টমেন্ট ভবনটি ঢাকার গুলশানে অবস্থিত। এই এলাকায় বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের পাশাপাশি বৃহৎ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও রয়েছে।
আদালতের নথি বা সংবাদ প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশে টিউলিপের সাথে সম্পর্কিত পঞ্চম সম্পত্তি পাওয়া গেছে। যদিও যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সূত্র জানিয়েছে যে, টিউলিপের বাংলাদেশে কোনও সম্পত্তি নেই। তাই, এই বিষয়ে কোনও প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। টিউলিপ সিদ্দিক প্রায় এক মাস আগে যুক্তরাজ্যের নগরমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছে। সে এখনও তার সম্পত্তি-সম্পর্কিত বিষয় এবং বাংলাদেশে তার খালা শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের সাথে তার যোগসূত্র নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছে।