শিশুর হাতে স্মার্টফোন দেওয়ার আগে যে সেটিংসগুলো অবশয়ই চালু করা প্রয়োজন
আমাদের সন্তানকে স্মার্টফোন দেওয়ার আগে সেটিংস পরিবর্তন করা এবং চালু করা অবশয়ই প্রয়োজন। কারণ বর্তমানে, সব বয়সের মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করছেন। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্মার্টফোন দিচ্ছেন। তবে, আপনার সন্তান হয়তো কেবল পড়াশোনার জন্য ফোনে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছে না। আপনি কি সেদিকে মনোযোগ দিচ্ছেন?
আপনার সন্তানের স্মার্টফোন ব্যবহারের দিকে নজর রাখুন। বিশেষ করে, তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় কার সাথে যোগাযোগ করছে সে সম্পর্কে সতর্ক থাকুন। তারা তাদের স্মার্টফোনে কোন অ্যাপ ব্যবহার করছে তা সাবধানে পর্যবেক্ষণ করুন।
স্মার্টফোনে প্রাপ্তবয়স্কদের কন্টেন্ট অ্যাক্সেস করা সহজ। তাই কোনও শিশুকে ফোন দেওয়ার আগে, কেবল কয়েকটি সেটিংস চালু করতে হবে যাতে তারা এই ধরণের জিনিস দেখতে না পারে, অন্তত বাবা-মায়ের ফোন থেকে।থাকে তা নিশ্চিত করার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে।
ডিজিটাল যুগে অনলাইন নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। শিশুরাও বিভিন্ন সময়ে তাদের অভিভাবকের স্মার্টফোন ব্যবহার করে। তবে, যদি কোনও শিশুর স্মার্টফোন থাকে, তবে অনেক ক্ষেত্রে অবাঞ্ছিত পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। অনলাইনে তাদের নিরাপদ রাখতে এবং অবাঞ্ছিত পরিস্থিতির ঝুঁকি এড়াতে, শিশুকে স্মার্টফোন দেওয়ার আগে সেটিংসগুলো সক্রিয় করতে হবে।
প্যারেন্টাল কন্ট্রোল
বেশিরভাগ ডিভাইসে প্যারেন্টাল কন্ট্রোল সুবিধা থাকে। এই সুবিধাটি একটিভ করা হলে, শিশুরা নির্দিষ্ট অ্যাপ, ওয়েবসাইট বা কন্টেন্ট অ্যাক্সেস করতে পারবে না। এটি শিশুদের নিরাপদ রাখবে।
- এর জন্য, প্রথমে অ্যান্ড্রয়েডে গুগল প্লে রেসট্রিকশন সক্ষম করতে হবে। এটি শিশুদের তাদের বয়সের জন্য উপযুক্ত নয় এমন অ্যাপ, গেম এবং অন্যান্য ওয়েব রিসোর্স ডাউনলোড করতে বাধা দেবে। এর জন্য, প্রথমে গুগল প্লে স্টোরে যান। তারপর বাম কোণে সেটিংসে যান। এখানে, আপনি ‘প্যারেন্টাল কন্ট্রোল’ বিকল্পটি পাবেন।
- এটিতে ট্যাপ করলে আপনাকে একটি পিন সেট করতে বলা হবে। অভিভাবকরা এই পিন সেট করে ‘প্যারেন্টাল কন্ট্রোল’ সেটিংস পরিবর্তন করতে পারেন। একবার পিন সেট হয়ে গেলে, প্রতিটি বিভাগের জন্য স্টোর-নির্দিষ্ট বয়স সেট করা যেতে পারে। কেবল বাচ্চাদের এই পিনটি বলে দিলে কাজ হবে না।
- সোশ্যাল মিডিয়া সেটিংস ইউটিউব এবং ইনস্টাগ্রামের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে ‘প্যারেন্টাল কন্ট্রোল’ বিকল্প রয়েছে। যদি বাবা-মা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপগুলিতে ‘প্যারেন্টাল কন্ট্রোল’ একটিভ করেন, তাহলে তারা সহজেই তাদের সন্তানের কার্যকলাপ ট্র্যাক করতে পারবেন এবং তাদের ভুল জিনিস দেখা থেকে বিরত রাখতে পারবেন।
কন্টেন্ট ফিল্টার
কন্টেন্ট ফিল্টার সুবিধা ব্যবহার করে, বিভিন্ন ওয়েবসাইটে অ্যাক্সেস এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য উপযুক্ত কন্টেন্ট অ্যাক্সেস সীমিত করা যেতে পারে। ফলস্বরূপ, শিশুরা কোনও ক্ষতিকারক কন্টেন্ট দেখতে পাবে না।
সেফ সার্চ সেটিংস বা নিরাপদ অনুসন্ধান সেটিংস
ওয়েবসাইট দেখার সফ্টওয়্যার বা ব্রাউজার এবং সার্চ ইঞ্জিনে নিরাপদ অনুসন্ধান সেটিংস সক্ষম করতে হবে। ফলস্বরূপ, ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময়ও শিশুরা সম্ভাব্য ঝুঁকি থেকে সুরক্ষিত থাকবে।
অ্যাপের অনুমতি
বিভিন্ন অ্যাপ স্মার্টফোনে বিভিন্ন তথ্য যেমন লোকেশন, কন্টাক্ট, মিডিয়া ফাইল ইত্যাদি অ্যাক্সেস করতে পারে এবং তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। কোন অ্যাপ কোন তথ্য সংগ্রহ করতে পারে তা আপনাকে পরীক্ষা করতে হবে। স্মার্টফোনে তথ্য সংগ্রহের জন্য অ্যাপের অনুমতি সীমিত করতে হবে। এটি যেকোনো ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত করবে।
স্ক্রিন টাইম লিমিট
ডিভাইস এবং অ্যাপে স্ক্রিন টাইম সীমিত করা যেতে পারে। ফলস্বরূপ, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পরে অ্যাপ ব্যবহার করা যাবে না। এটি শিশুদের অতিরিক্ত সময় ধরে স্মার্টফোন ব্যবহার থেকে রক্ষা করবে।
সন্তানদের তাদের নিজস্ব ইমেল আইডি
একটি পৃথক ইমেল আইডি অনেক সময়, সুবিধার জন্য, বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের তাদের নিজস্ব ইমেল আইডি ব্যবহার করে সমস্ত অ্যাপ চালানোর অনুমতি দেন। তবে বাচ্চাদের জন্য একটি ব্যক্তিগত ইমেল আইডি তৈরি করা ভালো হবে। এর মাধ্যমে, বাবা-মায়েরা কেবল তাদের সন্তানদের মিথ্যা বিজ্ঞাপন থেকে দূরে রাখতে পারবেন না, বরং তাদের সন্তানদের ইন্টারনেট কার্যকলাপ সহজেই ট্র্যাক করতে পারবেন।
সন্তানদের ইন্টারনেট সুরক্ষা সম্পর্কে সচেতন করা
ইন্টারনেট সুরক্ষা টিপসের পাশাপাশি, তাদের সন্তানদের ইন্টারনেট সুরক্ষা সম্পর্কে সচেতন করাও অভিভাবকদের কর্তব্য। ভাইরাস, ম্যালওয়্যার, সাইবার অপরাধ এবং অনলাইন পেমেন্ট সম্পর্কিত জালিয়াতি সম্পর্কে শিশুদের অবহিত রাখাও অনেক দূর এগিয়ে যাবে।