মুখে দুর্গন্ধ? প্রাকৃতিক সমাধান
মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে যারা মনে করেন , তারা আত্মবিশ্বাসের অভাবের শিকার হন। তারা যা বলতে চান তা স্পষ্টভাবে বলার সাহসও তাদের থাকে না। বন্ধুদের সাথে মুখ খুলতেও চান না। দুর্গন্ধের অন্যতম কারণ হল অপরিচ্ছন্নতা। অনেকের মুখে প্রচুর জীবাণু থাকে। যদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় না রাখা হয়, তাহলে এই জীবাণুগুলি সংক্রমণ এবং দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে। মুখে দুর্গন্ধ থাকা লজ্জাজনক এবং অস্বস্তিকর। অনেকেই এই সমস্যায় ভোগেন, কিন্তু কেন এই সমস্যা হয় বা এর সমাধান কী তা জানেন না।
মুখের স্বাস্থ্যের উপর, অর্থাৎ দুর্গন্ধমুক্ত মুখগহ্বরের উপর, ব্যক্তিত্ব এবং সৌন্দর্য অনেকাংশে নির্ভর করে। কিন্তু দুর্গন্ধ প্রায়শই একটি বিরক্তিকর সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। কেউ কেউ হয়তো এই অবস্থা সম্পর্কে খুব একটা সচেতন নন। নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করলেও অনেকের মুখে দুর্গন্ধ হয়। এর বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, যা খুবই বিরক্তিকরও বটে ।
মুখে দুর্গন্ধ কেন হয়?
- প্রতিবার খাওয়ার পর, মুখের খাদ্যকণা দাঁতের মাঝখানে এবং মাড়ির ভেতরে জমা হয়, যা ডেন্টাল প্লাক তৈরি করে। পরবর্তীতে মাড়ির প্রদাহ দেখা দেয়। এর ফলে মুখে দুর্গন্ধ হয়।
- মুখের যেকোনো ধরণের ঘা বা ক্ষত নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে।
- আঁকাবাঁকা দাঁতের কারণে আটকে থাকা খাদ্যকণা এবং ব্যাকটেরিয়া থেকে দুর্গন্ধ হয়।
- মুখের ক্যান্সারের কারণে দুর্গন্ধ হতে পারে।
- দাঁতে সিস্ট বা টিউমার থাকলে।
- মুখের কোনো দুর্ঘটনার কারণে ক্ষত।
এছাড়াও, শরীরের অন্যান্য রোগের কারণেও দুর্গন্ধ হতে পারে। যেমন;
- পেপটিক আলসার,লিভারের রোগ,গর্ভাবস্থা,কিডনির জটিলতা,ডায়াবেটিস,উচ্চ রক্তচাপ বা উচ্চ রক্তচাপ,গলা বা পেটের ক্ষত, এইডস,হৃদরোগ, মানসিক রোগ, এবং নাক, কান এবং গলার রোগ ইত্যাদি।
মুখে দুর্গন্ধ হলে কী করবেন?
- কিছু নিয়ম মেনে চললে দুর্গন্ধের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন
- তিনবার খাবার খাওয়ার পর, দাঁতের ভেতর এবং বাইরের সমস্ত অংশ পরিষ্কার, উচ্চমানের ব্রাশ এবং পেস্ট দিয়ে পরিষ্কার করা উচিত।
- দাঁতের সাথে সাথে জিহ্বা পরিষ্কার করাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জিহ্বায় অনেক ধরণের ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা দুর্গন্ধের জন্য দায়ী।
- প্রতি খাবারের পর দাঁত ব্রাশ করুন বা গার্গল করুন বিশেষ করে বিস্কুটজাত খাবার খাওয়ার পর ।
- ধূমপান বা তামাকজাত দ্রব্য, যেমন সোডা, পান ইত্যাদি এড়িয়ে চলা উচিত। এছাড়াও, ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহলও শুষ্ক মুখের জন্য দায়ী। তাই, এগুলি এড়িয়ে চলা উচিত।
- যাদের মুখের গহ্বর খুব শুষ্ক তাদের দুর্গন্ধের সমস্যা বেশি হয়। তাই, তাদের প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিত।
- লালা নিঃসরণ বাড়ানোর জন্য চিনি-মুক্ত লজেঞ্জ বা চিনি-মুক্ত চুইংগাম চুষে নিতে পারেন।
- খাবারের কণা প্রায়শই দাঁতের মাঝখানে বা মাড়ির ভিতরে জমা হয় এবং পচতে শুরু করে। অতএব, জীবাণুমুক্ত ডেন্টাল ফ্লস এবং টুথপিকের সাহায্যে খাদ্য কণাগুলি অপসারণ করতে পারেন।
- আওয়াজ করে কোন কিছুর আবৃতি বা রুচিসম্মত গান গেতে পারেন।
তা ছাড়াও অবসর সময়ে মুখের ভেতরে রাখতে পারেন
- লবঙ্গ:
- মধু এবং দারুচিনি
- উষ্ণ লবণ পানি
- লেবুর রস
- পুদিনা পাতা
- এলাচ
হ্যাঁ, মুখের দুর্গন্ধ একজন ব্যক্তিকে সামাজিকভাবেও অপমানিত করতে পারে। অতএব, এই সমস্যাটিকে উপেক্ষা করার পরিবর্তে, সঠিক সময়ে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এর জন্য, সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার পাশাপাশি, নিয়মিত একজন দন্তচিকিৎসকের কাছে যেতে হবে এবং তার পরামর্শ নিতে হবে।