ক্যাপিটল হিলে হামলায় দোষীদের ক্ষমা করা উচিত হয়নি: সিনেটর, ডেমোক্র্যাটিক নেতা
- শপথ গ্রহণের পরপরই ক্যাপিটল হিল দাঙ্গায় জড়িত ১,৫০০ জনকে ক্ষমা করেছেন ট্রাম্প।
- ট্রাম্প বাইডেন যুগের ৭৮টি নির্বাহী আদেশও বাতিল করেছেন।
সিনেটর এবং ডেমোক্র্যাটিক নেতা চাক শুমার বলেছেন যে, ৬ জানুয়ারী ক্যাপিটল হিল হামলার জন্য দোষী সাব্যস্তদের ক্ষমা করা উচিত ছিল না। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারী) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই তথ্য জানিয়েছে। দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি অনুসারে ক্যাপিটল হিল দাঙ্গায় জড়িত ১,৫০০ জনকে ক্ষমা করেছেন।
তিনি বলেন, “তারা আজ রাতে বিনা দ্বিধায় ঘুরে বেড়াবে। এটাই আমাদের প্রত্যাশা।” ট্রাম্প আরও ঘোষণা করেছেন যে, এই ঘটনায় অভিযুক্ত ছয় আসামির সাজা কমানো হবে। নির্বাচনের আগে ট্রাম্প সমর্থকদের আকৃষ্ট করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এবার তিনি সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছেন।
ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করে সিনেটর ডেমোক্র্যাটিক নেতা চাক শুমার এক বিবৃতিতে বলেছেন, “৬ জানুয়ারী ক্যাপিটল হিল হামলার জন্য দোষী সাব্যস্তদের ক্ষমা করা উচিত হয়নি।”
তিনি বলেন, “তারা আইন লঙ্ঘন করেছে এবং ক্যাপিটলে প্রবেশ করে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া রোধ করার চেষ্টা করেছে।” তারা যা করেছে তা ছিল একটি গুরুতর অপরাধ।
ডেমোক্র্যাট নেতা আরও মন্তব্য করেছেন যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প আইন ভঙ্গকারী এবং সরকার উৎখাতের চেষ্টাকারীদের জন্য একটি স্বর্ণযুগ শুরু করতে চলেছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প, ৬ জানুয়ারী, ২০২১ তারিখে ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গায় জড়িত থাকার জন্য গ্রেপ্তার হওয়া প্রায় ১,৫০০ জনকে ক্ষমা করেছেন। ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের প্রায় পুরো দিন ধরে তার সমর্থকরা ডিসি কারাগারের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন।
ক্যাপিটল ওয়ান এরিনায় ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ভাষণ দেন, তখন তিনি ঘোষণা করেন যে, তিনি ৬ জানুয়ারী ঘটনার অভিযুক্তদের ক্ষমা করবেন, ওভাল হাউসে পৌঁছানোর সাথে সাথে। সেই সময় উপস্থিত জনতা থেকে উল্লাস শোনা যাচ্ছিল। একজন মহিলা চিৎকার করে বলেন, ফ্রিডম (স্বাধীনতা)।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্যাপিটল হিল হামলার জন্য কারাবন্দী ব্যক্তিদের “রাজনৈতিক বন্দী” হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং তাদের ক্ষমা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যদিও এই ক্ষমা কতদূর যাবে এবং এতে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে কিনা তা স্পষ্ট নয়।
উল্লেখ্য, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন ২০২০ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন। ট্রাম্প নির্বাচনকে জালিয়াতির অভিযোগ এনে ফলাফল পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছিলেন। ফলে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি তার উগ্র সমর্থকরা ক্যাপিটাল হিলে দাঙ্গা শুরু করে। এ ঘটনায় অনেককে পরবর্তীতে কারাগারে পাঠানো হয়। সেদিন, সেই যৌথ অধিবেশনে জো বাইডেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসাবে ঘোষণা করার প্রস্তুতি চলছিল।
এক পর্যায়ে ট্রাম্প সমর্থকরা নিরাপত্তা ব্যারিকেড এবং ক্যাপিটল ভবনের প্রধান ফটক ভেঙে প্রবেশ করে। আক্রমণকারীদের অনেকেই সশস্ত্র ছিল। তারা ভেতরে ঢুকে সিনেট হলে তাণ্ডব চালায়।
শুধু তাই নয়, তারা তৎকালীন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি সহ বেশ কয়েকজন আইন প্রণেতার অফিসও ধ্বংস করে। হামলা ও সংঘর্ষে একজন পুলিশ অফিসার সহ পাঁচজন নিহত হন।
ডেমোক্র্যাটরা আক্রমণের প্ররোচনার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিশংসনের চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সিনেটে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট না পাওয়ায় ট্রাম্পকে সেই সময় খালাস দেওয়া হয়েছিল।