দখল করা গোলান মালভূমিতে জনসংখ্যা দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা করছে ইসরাইল
গোলান মালভূমি:
“গোলান মালভূমি, একটি ১১৫০ কিমি মালভূমি যা গোলান পর্বতমালার অংশ। ইসরায়েলের উত্তরে অবস্থিত এই সিরিয়ান ভূখণ্ডটি ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরাইল দখল করে নেয়। অঞ্চলটির জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক ইহুদি। ১১টি ইসরায়েল-অধিকৃত বসতির একটি হলো গোলান মালভূমি।”
ডিসেম্বর’২০২৪ আসাদ সরকারের পতনের পর, ইসরায়েল একটি “অস্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান” হিসাবে গোলান মালভূমির অবশিষ্টাংশ দখল করে। ইসরায়েল তখন গোলান মালভূমির নতুন দখলকৃত অংশের শহরগুলোর বাসিন্দাদের চলে যেতে বলে; অনেকে তা প্রত্যাখ্যান করলে, ইসরায়েল বাসিন্দাদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করার প্রয়াসে গ্রামে বিদ্যুৎ ও পানির নেটওয়ার্ক ধ্বংস করতে শুরু করে। এখন আবার ইসরায়েলি সরকারও গোলান মালভূমিতে ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।
সিরিয়া থেকে হুমকি আসতে পারে এমন অভিযোগ এনে দেশটির গোলান মালভূমির দখল নিয়েছে ইসরাইল। প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে, ইসরায়েল ঘোষণা করেছে যে তারা অধিকৃত গোলান মালভূমিতে তাদের জনসংখ্যা দ্বিগুণ করবে।
এ প্রসঙ্গে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেছেন, “গোলানকে শক্তিশালী করা মানেই ইসরায়েল রাষ্ট্রকে শক্তিশালী করা । এবং এটি এই সময়ে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এটিকে ধরে রাখার, এটিকে প্রসারিত করার এবং এখানে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করব।”
১৯৬৭ সালে, ইসরাইল ছয় দিনের যুদ্ধে সিরিয়া থেকে কৌশলগত মালভূমির বেশিরভাগ দখল করে। পরে, ১৯৮১ সালে, এই গোলানকে তার ভূখণ্ডে সংযুক্ত করে। তবে সিরিয়া এটিকে নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। যদিও তা ছিল ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে।
পরবর্তীতে ২০১৯ সালে, তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গোলানের উপর ইসরায়েলি সার্বভৌমত্বের প্রতি তার সমর্থন প্রকাশ করেন। যদিও অধিকাংশ দেশ এর বিরোধিতা করেছে। সিরিয়াও সে সময় গোলান ইসরায়েলকে ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। তবে, ইসরায়েল তার নিজস্ব নিরাপত্তা উদ্বেগ উল্লেখ করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে। এবারও একই কারণে গোলানে জনসংখ্যা বেড়েছে দেশটিতে।
নেতানিয়াহু বলেছেন যে, তিনি গোলান দখল এবং এর নিরাপত্তা নিয়ে ট্রাম্পের সাথে কথা বলেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সিরিয়ার সঙ্গে সংঘাতে আমাদের কোনো আগ্রহ নেই। সিরিয়ায় ইসরায়েলি তৎপরতার মূল উদ্দেশ্য ছিল “সিরিয়ার সম্ভাব্য হুমকি নস্যাৎ করা এবং আমাদের সীমান্তের কাছে সন্ত্রাসী উপাদানের দখল প্রতিরোধ করা।”
জানা গেছে যে প্রায় ৩১ হাজার ইসরায়েলি এই অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেছে। তাদের অনেকেই আঙ্গুর ক্ষেত এবং পর্যটন সহ কৃষিতে কাজ করে।