স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বৈঠকে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের ৭ দফা দাবি
জুলাই-আগস্টের বিদ্রোহে আহতদের নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বৈঠকে করেন ছয় উপদেষ্টা।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সভাপতিত্বে সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা মোঃ নাহিদ ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া, সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ, উপদেষ্টা মাহফুজ আক্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষ সহকারী মোঃ সাইদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে বৈঠক শুরু হয়।
এসময় আহতরা সাত দফা দাবি তুলে ধরেন। তাদের দাবিগুলো হলো,-
১. গণঅভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধাদের অতিদ্রুত মন্ত্রী বা উপদেষ্টারা আহত হলে যে মানের চিকিৎসা দেওয়া হতো সে মানের চিকিৎসা দিতে হবে।
২. গণঅভ্যুত্থানে যারা আহত হয়ে নিজ খরচে চিকিৎসা নিয়েছেন, তাদের চিকিৎসা খরচ পরিশোধ করতে হবে।
৩. গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধাদের সম্মাননা কার্ডের মাধ্যমে একটি প্রজন্ম পর্যন্ত মাসিক ভাতা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত যোদ্ধাদের স্মৃতি ফাউন্ডেশন নামে যাদুঘর নির্মাণ করে প্রতি বছর ১ জুলাই হতে ৫ আগস্ট পর্যন্ত শহীদদের স্মরণে গণ-স্বাক্ষর কর্মসূচির আয়োজন করতে হবে।
৫. গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছেন ও আহত হয়ে যারা অঙ্গ হারিয়েছেন, একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে তাদের মেডিকেল ফাইল তদন্ত করে কোনো ডাক্তার বা মেডিকেলের অবহেলার কারণ খুঁজে পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
৬. দ্রুত সময়ের মধ্যে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগীদের বিচারের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করে সেই সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
৭. আগামীতে রাষ্ট্র সংস্কারে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত যোদ্ধাদের মতামত গ্রহণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার উন্নত চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবিতে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন ইনস্টিটিউশনের (পঙ্গু হাসপাতাল) সামনে অবস্থান নেন জুলাই-আগস্টের গণজাগরণে আহতদের একটি দল। গভীর রাতেও তাদের বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। পরে আড়াইটার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চার উপদেষ্টা সেখানে উপস্থিত হয়ে দাবি পূরণ এবং আজ দুপুরে আহতদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করার প্রতিশ্রুতি দেন। আন্দোলনকারীরা হাসপাতালে ফিরে যেতে রাজি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আজ এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
গতকাল রাতে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন ইনস্টিটিউটে হাজির হন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। এ সময় স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষ সহকারী ডা. সাইদুর রহমানও তাদের সঙ্গে ছিলেন।
এ সময় উপদেষ্টা মাহফুজ আলম উপস্থিত জনতার প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, আগামীকাল (আজ) দুপুর ২টায় সচিবালয়ে আপনাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলব।
মাহফুজ আলম আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের একটি রূপরেখা তৈরি করেছেন এবং ডিসেম্বরের মধ্যে তা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।