ইমরান খান, দলের নেতাদের আত্মগোপন থেকে বেরিয়ে আসতে এবং গ্রেপ্তার হতে নির্দেশ দেন
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমরান খান এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাবন্দি রয়েছেন। কারাবাসের পর থেকে তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ তিনি আইনগতভাবে মোকাবিলা করছেন। আর এবার আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকা পিটিআই নেতারাও একই নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি তাদের আত্মগোপন থেকে বেরিয়ে এসে গ্রেফতার হওয়ার সাহস গ্রহণের নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি গণমাধ্যম।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমরান খান দলের আন্ডারগ্রাউন্ড নেতাদের সাহস করে বেরিয়ে আসার এবং গ্রেপ্তারের মুখোমুখি হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। বুধবার আদিয়ালা কারাগারে বক্তৃতায় ইমরান বলেন, তিনি নিজে কারাগারে আছেন এবং বাকি নেতাদেরও জেলে থাকার বিষয়ে ভয় করা বন্ধ করা উচিত। এছাড়া, আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকা নেতাদের গ্রেপ্তার, সব অভিযোগের মুখোমুখি এবং অবশেষে আদালত থেকে জামিন নেওয়ার নির্দেশ দেন ইমরান খান।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৯ মে ইমরানের গ্রেপ্তারের পর ব্যাপক সহিংসতার পরও মুরাদ সাইদ সহ অনেক পিটিআই নেতা এখনও আত্মগোপনে রয়েছেন। ৭১ বছর বয়সী ইমরান খান গত বছরের আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকটি মামলায় তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ইমরানের বিরুদ্ধে এখনো ডজন খানেক মামলা বিচারাধীন রয়েছে। সব মামলা থেকে জামিন ও সাজা স্থগিত করে ইমরান খানের এখন জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
উল্লেখ্য, ইমরান খানকে গত বছরের ৯ মে একটি দুর্নীতির মামলায় ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে নাটকীয়ভাবে গ্রেফতার করা হয়। তার গ্রেফতারের ফলে পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশটিতে চরম অস্থিরতা দেখা দেয়। আধা-সামরিক রেঞ্জার্স ইমরান খানের গ্রেপ্তারের পর পাকিস্তানে যে অস্থিরতা শুরু হয়েছিল তা চার দিন ধরে চলতে থাকে এবং কমপক্ষে ১০ জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু এবং অনেক সামরিক ও রাষ্ট্রীয় স্থাপনা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় ।
এছাড়াও, পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো, বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে রাওয়ালপিন্ডিতে দেশের সেনাবাহিনীর সদর দফতরে (জিএইচকিউ) প্রবেশ করে এবং লাহোরে কর্পস কমান্ডারের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। সামরিক বাহিনী পরবর্তীতে ৯ মে’কে ‘কালো দিবস’ হিসেবে অভিহিত করে এবং সেনা আইনে বিক্ষোভকারীদের বিচারের সিদ্ধান্ত নেয়। পরে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে ইমরান কারাগার থেকে মুক্তি পেলেও তার দল পিটিআই প্রবল দমন-পীড়নের মুখে পড়ে। সহিংসতা ও সামরিক স্থাপনায় হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে শত শত পিটিআই কর্মী ও সিনিয়র নেতাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।