November 26, 2024
ইফতার মাহফিল নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নীরব বিক্ষোভ

ইফতার মাহফিল নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নীরব বিক্ষোভ

ইফতার মাহফিল নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নীরব বিক্ষোভ

ইফতার মাহফিল নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নীরব বিক্ষোভ

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (এসএএসটি) রমজানে সম্মিলিত ইফতার নিষিদ্ধ ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে গণইফতার কর্মসূচি পালন শুরু করেছে ধর্মপ্রাণ শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এই গণ ইফতার কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার পার্টির ওপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী গণ ইফতার কর্মসূচির আয়োজন করেছে। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুরে ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি), জহুরুল হক হল মাঠ, সূর্যসেন, জসিমউদ্দিন, মহসিন হলের অভ্যন্তরীণ প্রাঙ্গণে গণ ইফতার করেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র  বলেন, দেশের দুই স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের ক্যাম্পাসে হাজার বছরের পুরনো বাঙালি ঐতিহ্যের ইফতার পার্টি নিষিদ্ধ করেছে। তারা দেশ থেকে ইসলামী সংস্কৃতি মুছে ফেলার চেষ্টা করছে। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

দুই ক্যাম্পাসে ইফতার পার্টি নিষিদ্ধ হওয়ায় জবিতে নীরব বিক্ষোভ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এর আগে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করলে জাবির প্রক্টরিয়াল বডি তাতে বাধা দেয়।

দুপুর দুইটায়  বাদ জোহর মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে পৌঁছালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাধা দেয়।

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, দুই ক্যাম্পাসে ইফতার পার্টির নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করতে চেয়েছিলেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। আমি তাদের ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে মানববন্ধন করতে বলেছি। যেহেতু আমাদের একটি ছোট ক্যাম্পাস, তাই ক্লাস-পরীক্ষায় সমস্যা হতে পারে। আর এখানে ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে ধর্মীয় ইস্যু টেনে আনা ভালো হবে না।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গোলচত্বরে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এই প্রকাশ্য ইফতার কর্মসূচি পালন করে।

এদিন ইফতারের ঘণ্টাখানেক আগে থেকেই একসঙ্গে ইফতার করতে হল ও ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে শিক্ষার্থীরা আসতে শুরু করে। অনেক শিক্ষার্থী তাদের সঙ্গে ইফতার নিয়ে আসেন। শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ইফতার সম্পন্ন হয়।

এর আগে সোমবার এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ক্যাম্পাসে ইফতার পার্টির আয়োজন না করতে অনুরোধ করে শাবি প্রশাসন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এ আদেশ জারি করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

এ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দুই শতাধিক সাধারণ শিক্ষার্থী অংশ নেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা রোজার গুরুত্ব ও ফজিলত নিয়ে আলোচনা করেন এবং শাবিপ্রবি ও নোবিপ্রবিতে ইফতার পার্টি নিষিদ্ধ করার জন্য দুই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। এ ছাড়া তারা ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

চবির  এক ছাত্র  বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু দ্বৈত কর্মকর্তা বিভিন্ন পশ্চিমা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা করলেও রমজানের ইফতার পার্টিতে বিধিনিষেধ আরোপ করে। কিন্তু তারা সব সময় ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানান।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, তাবেদা সরকার ও তার অধীনস্থ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার পরিবেশে ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি’ বিনষ্ট করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে পবিত্র রমজান মাসে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন বৃদ্ধিতে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ দিশেহারা ও ক্ষুব্ধ। এমতাবস্থায় অবৈধ সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশের ধর্মীয় সম্প্রীতির ওপর আঘাত হানছে সাধারণ মানুষের দৃষ্টি সরিয়ে এসব অলিগার্কদের অবাধে লুটপাটের সুযোগ করে দিচ্ছে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে সেহরিতে গরুর মাংস নিষিদ্ধ করা, অবৈধ শিক্ষামন্ত্রীর মাদ্রাসা শিক্ষা বিরোধী বক্তব্য- এসবই তাদের পূর্ব পরিকল্পনার অংশ। অবৈধ সরকারের এ ধরনের অপকৌশল থেকে শিক্ষার্থীদের সতর্ক থাকতে হবে।

তারা আরো বলেন, পবিত্র রমজান মাসে ইফতার মাহফিল আমাদের সামাজিক সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর সামাজিক আবেদন খুবই শক্তিশালী। ইচ্ছাকৃতভাবে ইফতার উদযাপনে ব্যাঘাত ঘটানো মুসলমানদের তাদের ধর্ম পালনের স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করার শামিল। আমরা এ ধরনের কোনো জনবিরোধী সিদ্ধান্ত না নেওয়ার জন্য দেশের সকল স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X