যুক্তরাজ্যে প্রায় প্রতি পাঁচ মিনিটে একটি গাড়ি চুরি হয়ঃ যার শীর্ষে রয়েছে রাজধানী লন্ডন
প্রিয় বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা দিয়েই আরম্ভ করছি
“পরের মুলুক লুট করে খায় ডাকাত তারা ডাকাত!
তাই তাদের তারে বরাদ্দ ভাই আঘাত শুধু আঘাত “!
হাজার হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা সত্ত্বেও বন্ধ হচ্ছে না এসব অপরাধ। সম্প্রতি লন্ডন থেকে অনেক বিলাসবহুল গাড়ি চুরি হয়েছে। যুক্তরাজ্য পুলিশের দাবি অনুযায়ী তারা কিনা তথ্যের ভিত্তিতে পাকিস্তান পুলিশ করাচি থেকে এটি উদ্ধার করে।
যুক্তরাজ্যে গাড়ি চুরির হার অপ্রত্যাশিতভাবে বেড়েছে। বেড়েছে। তার এক চতুর্থাংশের বেশি রাজধানী লন্ডন থেকে চুরি হয়। চোরদের প্রধান টার্গেট ফোর্ড মডেল, ল্যান্ড রোভার, মার্সিডিজ, বিএমডব্লিউ, ভক্সহল ইত্যাদি সহ টপ মডেলের প্রাইভেট কার।
নতুন তথ্য অনুসারে, রাজধানী শহর লন্ডনে ২০২২-২০২৩ সালে সর্বাধিক সংখ্যক গাড়ি চুরির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ফোর্ড মডেল ১৭%, ল্যান্ড রোভার ১১%, মার্সিডিজ ১০%, বিএমডব্লিউ এবং ভক্সহলস ৮% ।
ক্লেইমস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড অ্যাডজাস্টিং (সিএমএ) দ্বারা ড্রাইভার অ্যান্ড ভেহিকেল লাইসেন্সিং এজেন্সি (ডিভিএলএ) এর কাছে পাওয়া তথ্য অনুসারে দেখা যায় যে, ২০২২-২০২৩ সালে লন্ডনে ২৬,১১৭ টি গাড়ি চুরি হয়েছে আর পুরো যুক্তরাজ্যে মোট চুরি হয়েছে ৯৮,৭৩০টি।
অর্থাৎ প্রতি ১০০,০০০ জনসংখ্যার জাতীয় গড় হার ১৪৬.৬৩ হারে যুক্তরাজ্যে প্রায় প্রতি পাঁচ মিনিটে একটি গাড়ি চুরি হয়। অন্যদিকে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ জানায়, ২০২২ সালে ৯০,৮৬৪টি ফোন চুরির ঘটনা ঘটেছে। অর্থাৎ দিনে প্রায় ২৫০টি করে ফোন চুরি হয়েছে।
বাংলাদেশি অধ্যুষিত পূর্ব লন্ডনে ২০২৩ সালে অসংখ্য দামি গাড়ি চুরি হয়। স্থানীয় অনলাইন সাংবাদিকরা এ নিয়ে সংবাদ প্রচার করেছেন।
একটি সংগঠিত গাড়ি চুরির চক্র রয়েছে, যার নেটওয়ার্ক যুক্তরাজ্য থেকে ইউরোপীয় দেশগুলিতে বিস্তৃত। চক্রগুলো গাড়ির ওপর প্রি-টার্গেট করে গাড়ি কোথায় পার্ক করা আছে, কী ধরনের লক ব্যবহার করা হচ্ছে, কতক্ষণ পার্ক করা আছে এসবের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে। পরে সে সুযোগ নিয়ে চুরি করে। চুরি যাওয়া গাড়িগুলো মূলত ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অনেকেই মনে করেন, বেশিরভাগ চোরাচালান হয় পূর্ব ইউরোপে, এক্ষেত্রে মেগা মালবাহী লরি ব্যবহার করা হয়। শীর্ষ মডেলের গাড়ি চুরি করতে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মডেল বোঝার জন্য উন্নত সফ্টওয়্যার ব্যবহার করা হয়। লিবারেল ডেমোক্র্যাটদের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর (২০২২) লন্ডনে চুরি হওয়া গাড়ির সংখ্যা ছিল৩০,০০০-এর বেশি।
চুরির সাথে জড়িত বেশিরভাগ অপরাধ অমীমাংসিত হয়ে যায়। গত বছর ৩০১৭ টি গাড়ি চুরির মধ্যে, ৮৭.২% গাড়ি চুরিই মেট্রোপলিটন পুলিশ সমাধান করতে পারেনি। এটি ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের পুলিশ বাহিনীর সর্বোচ্চ অনুপাত। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে, এই আনুপাতিক হার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে । লন্ডন পুলিশ গাড়ি চুরি ঠেকাতে চরম সতর্কতা অবলম্বন করছে। গাড়ির মালিকরাও সতর্কতার সাথে উন্নত বাহ্যিক লক ব্যবহার করছেন।
যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে গাড়ি চুরির ঘটনা বেড়েছে। ‘গো সোর্টি’ নামের একটি সংস্থার একটি সমীক্ষায় জানা গেছে যে লন্ডনে প্রতিদিন গড়ে ৬৮টি গাড়ি চুরি হয়। সংস্থাটি বলছে, শুধু গত জুনেই লন্ডনে ২ হাজার ৭৪৩টি গাড়ি চুরি হয়েছে। আর প্রতি পাঁচ মিনিটে একটি গাড়ি চুরি হয় যুক্তরাজ্যে।
হাজার হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এসব অপরাধ বন্ধ হচ্ছে না। সম্প্রতি লন্ডন থেকে প্রায় ২ লাখ পাউন্ড (প্রায় ২ কোটি ১৭ লাখ টাকা) মূল্যের একটি বিলাসবহুল ব্রেন্টলি ব্র্যান্ডের গাড়ি চুরি হয়েছে।যদিও পুলিশের কথা হল, যুক্তরাজ্য পুলিশের তথ্যের ভিত্তিতে পাকিস্তানি পুলিশ করাচি থেকে গাড়িটি উদ্ধার করেছে।
লন্ডনের মানুষ তাদের গাড়ি নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে। সেখানে প্রতিদিনই গাড়ি চুরির ঘটনা ঘটছে। কিছু লোক অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য তাদের গাড়িতে কার ট্র্যাকার বা লক ইনস্টল করছে। কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মুহূর্তের মধ্যে দরজা খুলে গাড়ি নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছে চোরেরা।
হাজার হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এসব অপরাধ বন্ধ হচ্ছে না। হয়। যুক্তরাজ্য পুলিশের তথ্যের ভিত্তিতে পাকিস্তানের পুলিশ করাচি থেকে সেটি উদ্ধার করেছে।
যুক্তরাজ্য সরকারের ওয়েবসাইটে পরামর্শ দেয়া হয় যে , যদি কারো গাড়ি চুরি হয়, অবিলম্বে জরুরি পরিষেবা নম্বর ১০১ ডায়াল করুন, চুরি হওয়া গাড়ির বিষয়ে পুলিশে রিপোর্ট করুন, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, মডেল এবং রঙ উল্লেখ করুন এবং পুলিশ রিপোর্টের রেফারেন্স নম্বর সহ বীমা কোম্পানিকে জানান।
আরও পড়ুন
লন্ডনে প্রতি ৬ মিনিটে একটি মোবাইল ফোন চুরি হয়, যার মাত্র দুই শতাংশ উদ্ধার হয়