November 22, 2024
শিশুদের কবরস্থানে পরিণত হয়েছে গাজা: জাতিসংঘ

শিশুদের কবরস্থানে পরিণত হয়েছে গাজা: জাতিসংঘ

শিশুদের কবরস্থানে পরিণত হয়েছে গাজা: জাতিসংঘ

শিশুদের কবরস্থানে পরিণত হয়েছে গাজা: জাতিসংঘ

ফিলিস্তিনি এক শিশুকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে নামাজ পড়ো কয় ওয়াক্ত?  শিশুটি খুবই স্বাভাবিকভাবে জবাব দিল আমরা ৬ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি । প্রশ্নকর্তা আশ্চর্য হয়ে গেলেন যে, আল্লাহতালা তো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন তাহলে তোমরা ছয় ওয়াক্ত পড়ো কেন ? সে বলল তাহলে আমি অক্ত গুলোর নাম বলি আপনি শুনুন; তারপর শিশুটি বলল;

১. ফজরের নামাজ

২. জোহরের নামাজ

৩. আসরের নামাজ

৪. মাগরিবের নামাজ

৫. এশার নামাজ এবং

 ৬. জানাজার নামাজ

অশ্রুসিক্ত প্রশ্নকর্তা থেমে গেলেন । আর বললেন এই হল ফিলিস্তিন । এই হল ফিলিস্তিনের শিশু । তিন ভাবলেন যদি ফিলিস্তিনে  না আসতাম তাহলে হয়তো প্রকৃত ঈমানদার দেখা কষ্ট হতো।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, গাজায় “ইনকিউবেটরে থাকা শিশুরা এবং লাইফ সাপোর্টে থাকা রোগীরা বিদ্যুৎ ও অক্সিজেন সরবরাহ ছাড়াই মারা যাচ্ছে।” আমরা গাজায় আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন প্রত্যক্ষ করছি। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য এখনই মানবিক প্রয়োজনে  যুদ্ধবিরতি জরুরি।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন, নির্বিচারে বোমাবর্ষণের কারণে গাজা উপত্যকা এখন শিশুদের কবরস্থানে পরিণত হয়েছে। এই হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি গাজায় ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান।

সংবাদ  অনুসারে, গুতেরেস সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে সাংবাদিকদের বলেন, “এমন বিপর্যয়কর পরিস্থিতির কারণে প্রতি ঘন্টায়  ঘন্টায় একটি মানবিক যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা আরও জরুরি হয়ে উঠছে।”

তিনি বলেন, “সংঘাতে জড়িত পক্ষগুলো ছাড়াও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই এই অমানবিক দুর্ভোগ বন্ধ করতে হবে এবং গাজায় মানবিক সাহায্য দ্রুত বাড়াতে হবে।” গাজার দুঃস্বপ্ন মানবিক সংকটের চেয়েও বেশি। এটা মানবতার সংকট।’

গাজায় হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ১০২০০ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। এদের প্রায় অর্ধেকই নারী ও শিশু।সেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে হাজার হাজার ভবন ধসে পড়েছে এবং দেড় লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

গুতেরেস চলমান সংঘর্ষ ও হামলায় গণমাধ্যমকর্মীদের হত্যার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। নিউইয়র্ক ভিত্তিক কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে) অনুসারে, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে লড়াইয়ে অন্তত ৩৬ সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন।

“ইনকিউবেটরে থাকা শিশুরা এবং লাইফ সাপোর্টে থাকা রোগীরা বিদ্যুৎ এবং অক্সিজেন ছাড়াই মারা যাচ্ছে,” গুতেরেস বলেছেন। গাজায় ঠিক এটাই ঘটছে।

এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে এখনই মানবিক যুদ্ধবিরতি পালন করা জরুরি। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার বাধ্যবাধকতা সব পক্ষেরই রয়েছে।”আমরা গাজায় আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন প্রত্যক্ষ করছি।”গাজায় এক মাসে ৪ হাজারের বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে

গত এক মাস ধরে গাজায় মৃত্যু মিছিল চলছে। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ১০,২০০ ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। এদের প্রায় অর্ধেকই নারী ও শিশু। যার মধ্যে শিশুর সংখ্যা চার হাজারের ওপরে।ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।

রোববার রাতে গাজার বুরেজি শরণার্থী শিবিরে বিমান হামলায় অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় আল আকসা হাসপাতাল এ খবর নিশ্চিত করেছে। কোনো হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স, শরণার্থী শিবির বা স্কুল হামলা থেকে রেহাই পায়নি। ইসরায়েলি বাহিনী ধারাবাহিকভাবে তাদের হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া গাজার জাওয়াদাইতে রোববার রাতে হামলায় ১০ জন নিহত হয়েছেন।

গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, রোববার রাতের হামলার পর সোমবার ভোরের আগে অনেক এলাকায় জরুরি সেবা পৌঁছাতে পারেনি। এ কারণেই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা।

৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায়। সেই সাথে ২৪৮ জনকে বন্দী করা হয়। এরপর থেকে তীব্র ক্ষোভের জেরে গত এক মাসে লাগাতার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। তবে এই বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবিতে তার বাসভবন ঘেরাও করেছে বিক্ষোভ।

বিস্তৃত এলাকায় ছড়িয়ে পড়া সংঘর্ষের ঝুঁকি নিয়ে আলোচনা করার জন্য তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান  এই মহাসচিব। “আমরা ইতিমধ্যেই লেবানন এবং সিরিয়া থেকে ইরাক এবং ইয়েমেনে সংঘাতের বৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছি,”

ইহুদি-বিদ্বেষী এবং মুসলিম-বিরোধী বক্তব্য বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক জায়গায় ইহুদি ও মুসলমানরা তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় আছে।

গাজায় অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে গুতেরেস ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের প্রয়োজনীয়তার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। জাতিসংঘের প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, চলমান সহিংসতায় ২৩ লাখ গাজাবাসীর মধ্যে ১৫ লাখই বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

আরও পড়তে

ইসরায়েলের নির্মম নির্যাতন থেকে রেহাই পাচ্ছে না ফিলিস্তিনি শিশুরাও

১ বৈঠকে সম্পূর্ণ কোরআন মুখস্ত শোনালেন ১৪৪২ জন ফিলিস্তিনি হাফেজে কুরআন

ফিলিস্তিনি ইস্যুতে ইরান-সৌদি আরব ঐক্যবদ্ধ: পাল্টে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের হিসাব-নিকাশ

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X