দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রয়োজনীয় সামরিক প্রস্তুতির আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
শেখ হাসিনা ওয়াজেদ (জন্ম: ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭) বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদের ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালনকারী প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। চার দশকেরও বেশি সময় বিস্তৃত তার রাজনৈতিক জীবন। তিনি ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ এবং ১৯৯১-১৯৯৫ সাল পর্যন্ত বিরোধী দলীয় নেতা এবং ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী এবং ১৯৮১ সাল থেকে আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট তার পরিবারের অনেকগুলো ব্যক্তির হত্যাকাণ্ডের কঠিন সময়ে তিনি এবং তার বোন শেখ রেহেনা বেঁচে যান। এবং এরপর থেকে অত্যন্ত সুকৌশলী নেতৃত্ব এবং সুচারুরূপী দক্ষতা ও সাহসিকতার সাথে তার দলকে সামনে এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনার বিকল্প আওয়ামী লীগে কেউ ছিলেন না বলে মনে করা হয়।
বিপুল ভোটে জিতে ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফিরে আসেন শেখ হাসিনা ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে,যেখানে বিরোধীদলহীন নির্বাচনে,নির্বাচনের আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন ঘোষণার মাধ্যমে বিরোধী দল এবং আন্তর্জাতিক সমালোচনায় বর্জিত নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে, তিনি সহিংসতা পূর্ণ এবং বিরোধীদের দ্বারা কারচুপির অভিযোগে গোপনে রাত্রিকালীন ভোটের মাধ্যমে কারচুপি করা একটি নির্বাচনে চতুর্থ মেয়াদের জন্য প্রধানমন্ত্রী হ্রু
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনাকে বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ফোর্বস ম্যাগাজিনের মতে, ২০২০ সালে বিশ্বের ১০০ ক্ষমতাধর নারীর তালিকায় তিনি ৩৯তম, ২০১৯ সালে ২৯তম, ২০১৮ সালে ২৬তম এবং ২০১৭ সালে ৩০তম স্থানে ছিলেন। এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ফরেন পলিসি ম্যাগাজিন দ্বারা বিশ্বব্যাপী শেখ হাসিনা শীর্ষ ১০০ বৈশ্বিক রাজনীতিবিদদের তালিকায় স্থান পেয়েছেন। তিনি বর্তমান এবং প্রাক্তন মহিলা রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীদের একটি আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক ওয়ার্ল্ড কাউন্সিল অফ উইমেন লিডারস-এর সদস্য।
সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষায় প্রস্তুতি নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ চাই না, শান্তিতে থাকতে চাই। কিন্তু আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে হবে।
রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) নৌপ্রধান সচিবালয়ে বাংলাদেশ নৌ ও বিমান বাহিনী সিলেকশন বোর্ড-২০২৩-এর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিকায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন।
তিনি বলেন, জনগণের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির স্বার্থে বাংলাদেশ সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘প্রতিটি দেশের সঙ্গে আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আমরা যেমন জাতির পিতার দেওয়া নীতি অনুসরণ করছি, তেমনি সবার সঙ্গে সমানভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখছি। কারণ আমাদের লক্ষ্য দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন।
দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তার সরকারের প্রচেষ্টার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, সরকার সফলভাবে দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি সাধন করছে।
প্রধানমন্ত্রী জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সরকারের লক্ষ্য বাস্তবায়নে সহযোগিতার জন্য সশস্ত্র বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধে জড়াব না। সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখব। তার সরকার সফলভাবে এ ধরনের সম্পর্ক বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়’ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা নৈতিকতা, ব্যবহারিক দিক সম্পর্কে জ্ঞান, দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, দায়িত্ববোধ এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা সম্পন্ন কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে বিচক্ষণ ও নিরপেক্ষ মূল্যায়ন করার জন্য বাছাই বোর্ডকে নির্দেশ দেন।
তিনি আরও বলেন, “নেতৃত্বের পদের জন্য, আপনার এমন কর্মকর্তাদের বেছে নেওয়া উচিত যারা যেকোনো সময় সিদ্ধান্ত নিতে পারদর্শী এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে তাদের বিচক্ষণতা প্রয়োগ করে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম।”
আরও পড়ুন
আমেরিকায় যাওয়ার দরকার নেই, আরও অনেক মহাদেশ আছে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনীর অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে বলেন, প্রতিটি দুর্যোগে তারা সবসময় জনগণের পাশে থাকে।
তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় কথা হলো আপনারা জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছেন। শেখ হাসিনা আরও বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর তারা সফলতার সাথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন এবং বিশ্ব মঞ্চে এর মর্যাদা তুলে ধরেছেন।
তিনি বলেন, “আমরা অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জন করেছি। শুধু তাই নয়, সারা বিশ্বের সামনে বাংলাদেশের একটি উজ্জ্বল ভাবমূর্তিও তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে আবির্ভূত হতে সক্ষম হয়েছে।
1 Comment