এবারও রমজানে ১০ টাকা লিটার দুধ খাওয়াবেন এরশাদ
তিন বছর ধরে প্রতি রমজানে তিনি এ সেবা করে যাচ্ছেন। তিনি আশপাশের এলাকার মানুষের কাছে দুধ বিক্রি করছেন খুবই নামমাত্র দামে। এবার আরও বড় পরিসরে কাজ হবে। রোজার প্রথম দিন থেকে সারা মাস লিটার প্রতি ১০ টাকা দরে দুধ বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে এরশাদ উদ্দিনের। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি চলছে। গত ১২ মার্চ ফেসবুকে এক পোস্টে নামমাত্র মূল্যে দুধ বিক্রির ঘোষণা দেন তিনি।
এরশাদ উদ্দিন বাংলাদেশ মিলস্কেল রি-প্রসেস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও জেসি অ্যাগ্রো ফার্মের চেয়ারম্যান।
গত তিন-চার বছরে নিজ এলাকায় খামারটি গড়ে তোলেন তিনি। বিভিন্ন সামাজিক ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও যুক্ত এই উদ্যোক্তা।
জানা গেছে, জেসি অ্যাগ্রো ফার্মে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বর্তমানে পাঁচ শতাধিক গরু মোটাতাজা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে উন্নতজাতের ২৫টি গাভিও পালন করা হচ্ছে খামারে। গাভিগুলো থেকে প্রতিদিন ৭০-৭৫ লিটার দুধ পাওয়া যাচ্ছে। এ দুধই ১০ টাকা লিটার দরে বিক্রি করা হবে। গত বছর একই সময়ে দুধ বিক্রি করলেও পরিধি এত বড় ছিল না। এবার খামারে গাভির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় উদ্যোগটিও বড় হয়েছে।
জেসি অ্যাগ্রো ফার্মের চেয়ারম্যান এরশাদ উদ্দিন বলেন, রোজার সময় লোকজন একটু ভালোমন্দ খেতে চায়। সবাই চায় অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি পাতে খানিকটা দুধও থাকুক। দুধ শরীরের জন্য খুব উপকারী। কিন্তু দুধসহ সব কিছুর দামই তো আকাশছোঁয়া। ইচ্ছা থাকলেও সবাই দুধ কিনতে পারবে না। এসব বিষয় ভেবে এবারের উদ্যোগটি আমি বড় করে নিয়েছি। গত বছর এক টন পরিমাণ দুধ বিক্রি করেছি। এবার ইচ্ছা আছে পরিমাণটা দ্বিগুণ করার।
তিনি বলেন, রোজার প্রথম দিন থেকে প্রতিদিন ৭০ জনের কাছে এক লিটার করে দুধ বেচা হবে। এটি চলবে রোজার শেষ দিন পর্যন্ত। আর প্রতি লিটার দুধের দাম ধরা হয়েছে মাত্র ১০ টাকা। এটি আর কিছু নয়, প্রতীকী মূল্য মাত্র। দুধের দাম ধরা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যাঁরা দুধ নেবেন, তাঁদের মনের মধ্যে যেন এ নিয়ে কোনো দ্বিধা বা সংকোচ না থাকে—এ কারণেই দুধের দাম ধরা হয়েছে। এটি দয়া বা দানের পর্যায়ে পড়বে না।
জেসি এগ্রো ফার্মের প্রতিষ্ঠাতা। এরশাদ উদ্দিন বিভিন্ন ব্যবসার সাথে জড়িত থাকলেও তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় সমাজসেবামূলক কাজের সাথে জড়িত। তিনি প্রায় প্রতি বছরই কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করেন। যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান। তার প্রতিষ্ঠিত এরশাদ উদ্দিন মানব কল্যাণ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে করিমগঞ্জ ও আশপাশের এলাকার মানুষকে নিয়মিত আর্থিক অনুদান ও সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। তা ছাড়া শিক্ষার প্রসারে এলাকায় নিজ খরচে একটি কলেজ ও স্কুল নির্মাণ করেছেন। প্রতি বছর ঈদ ও পূজার সময় তিনি মানুষকে বড় ধরনের আর্থিক অনুদান ও জামাকাপড় দেন।
নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হালিম বলেন, রমজান মাসে গরিব মানুষের কাছে ১০ টাকা লিটারে দুধ বিক্রির এই উদ্যোগের জন্য এরশাদ উদ্দিনকে সাধুবাদ জানাই। তার উদ্যোগে কয়েক বছর ধরে রমজানে নামমাত্র মূল্যে দুধ সেবন করতে পারছেন এলাকার বেশ মানুষ জন। এলাকার অন্যান্য সমাজসেবায়ও তিনি অবদান রেখেছেন।