November 25, 2024
ভারতে সামাজিকভাবে পোষা প্রাণীদের বিয়ে

ভারতে সামাজিকভাবে পোষা প্রাণীদের বিয়ে

ভারতে সামাজিকভাবে পোষা প্রাণীদের বিয়ে

ভারতে সামাজিকভাবে পোষা প্রাণীদের বিয়ে

কনে সুইটি-বর শেরু (দুটিই কুকুর)

অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষের দিকে এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে, বাঙালি বাবু সংস্কৃতিতে চারপেয়ে  পোষা প্রাণীকে বিয়ে করার প্রথা উল্লেখ করা হয়েছে। বিভিন্ন বাংলা সাহিত্যে পোষা বিড়ালের বিয়ের অনুষ্ঠানের বর্ণনা রয়েছে। শুধু পোষা প্রাণী নয়, গাছেরও বিয়ে হতো সে সময়।

বাবু সংস্কৃতি বিলুপ্ত হওয়ার সাথে সাথে বিড়াল বিবাহের প্রথাও বিলুপ্ত হয়ে যায়। কিন্তু ভারতের বিভিন্ন জায়গায় এখনও পোষা প্রাণীদের বিয়ে হয়। সম্প্রতি এমন একটি ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে।

বাড়িতে বিয়ের ঘণ্টা বাজছে। চারিদিকে সাজগোজ। গুরুগ্রামের দুই দম্পতি তাদের সন্তানদের বিয়ে করছেন। কিন্তু এই বিয়েটা সাধারণ হলেও অসাধারণ। বিয়েতে বর-কনের পিঁড়িতে বসে রয়েছে দুই চারপেয়ে। এক হয়ে যাচ্ছে তাঁদের চার পা।

সমস্ত সামাজিক রীতি-নীতি মেনেই আয়োজন করা হয়েছিল বিয়ের অনুষ্ঠান। রোববার গুরুগ্রামের পালাম বিহার এলাকার জৈল সিংহ কলোনিতে এই ঘটনা ঘটেছে।

কনের নাম সুইটি। সবিতা ওরফে রানি দত্তক নিয়েছিলেন সুইটিকে। তার স্বামী রাজা একজন চা বিক্রেতা। এক সাক্ষাৎকারে রাজা জানিয়েছেন, তিনি এবং তার স্ত্রী রানি তিন বছর আগে সুইটিকে দত্তক নিয়েছিলেন।

রাজা নিয়মিত মন্দিরে গিয়ে রাস্তার পশু-পাখিদের খাবার খাওয়াতেন। এক দিন, সুইটি তাকে অনুসরণ করে বাড়ি চলে আসে। তার পরেই তাকে বাড়িতে রেখে দেন রাজা এবং রানি।

রাজা জানান, তার প্রতিবেশী রামসেবক নামের এক ব্যক্তির একটি পোষা কুকুর রয়েছে। নাম— শেরু। সম্প্রতি তিনি ঠাট্টা করে বলেন, তাদের কুকুর দু’টির বিয়ে দিলে কেমন হয়?

সুইটির কথা জিজ্ঞাসা করলে রানি জানান, তার কোনো সন্তান নেই। সুইটিকেই নিজের মেয়ের মতো ভালবাসেন তিনি। ‘‘আমাদের বাড়িতে আরও অনেক পোষ্য রয়েছে। আমি এবং আমার স্বামী দু’জন মিলে তাদের যত্ন নিই। সুইটির বিয়ে নিয়ে পাড়ার অনেকেই পরামর্শ দিয়েছিলেন। আমরাও সে বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করে চার দিনের মাথায় পাত্র খুঁজে বিয়ে দিই। বিয়ের অনুষ্ঠানের সমস্ত আচার পালন করেই বিয়ে দেওয়া হয়েছে, বললেন রানি।

বরের নাম শেরু। শেরুর দেখাশোনা করেন মনিতা নামে এক ব্যক্তি। শেরু প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, গত আট বছর ধরে শেরু তাদের কাছে রয়েছে। শেরুর বিয়ে নিয়ে মনিতা এবং তার স্বামী দু’জনেই উৎসাহী।

মনিতা আরও বলেন, ‘‘গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে খাওয়া-দাওয়া, নাচ-গান কিছুই বাদ যায়নি তাদের বিয়েতে।’’ তিনি জানান, বিয়ে উপলক্ষে ১০০ জনকে নিমন্ত্রণও জানানো হয়েছিল। ২৫ জনকে বিয়ের কার্ড পাঠালেও বাকিদের অনলাইন মাধ্যমে নিমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন শেরু এবং সুইটির বাবা-মা।

নিমন্ত্রিত অতিথিদের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে মনিতা বলেন, ‘‘কেউ কেউ খুব পছন্দ করেছেন, কেউ আবার পছন্দ করেননি। কিন্তু বাবা-মা হিসেবে আমরা খুশি। কে কী ভাবলেন তা নিয়ে কিছু যায় আসে না।’’

তবে সরমায়াদের বিয়ে এই প্রথম নয়। এর আগে ভারতে কুকুরের বিয়ে হয়েছে বহুবার।২০১৬ সালে, উত্তর প্রদেশের কৌসাম্বি জেলায় শগুন-শগুনিয়ার বিয়ে হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X