ওয়াচ লিস্টে লাখ লাখ ন্যাচারালাইজড সিটিজেন
আমেরিকান নাগরিকত্ব বাতিল হতে পারে যেসব কারণে
নিজস্ব প্রতিবেদক

যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনবিরোধী অভিযান এখন এক নতুন রূপ নিচ্ছে। শুধু অবৈধ অভিবাসী নয়, বরং আইনগত ন্যাচারালাইজড প্রক্রিয়ায় নাগরিকত্ব পাওয়া অভিবাসীদেরও এখন টার্গেট করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ অপরাধে যুক্ত থাকলে কিংবা তথ্য গোপন বা কাগজপত্রে ত্রুটিসহ সামান্য ভুল থাকলেই সিটিজেন নাগরিকদেরও ডি—ন্যাচারালাইজেশন কার্যক্রম জোরদারের নির্দেশ দিয়েছে। এমন নির্দেশনায় অভিবাসীদের নিয়ে দুশ্চিন্তার আভাস ইমিগ্র্যাশন বিশেষ্জ্ঞদের।
এদিকে ইলন মাস্ক ও নিউ ইয়র্ক ডেমোক্র্যোট মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানীকে নাগরিকত্ব নিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্য সে দু:শ্চিন্তায় পারদ ঢেলে দিয়েছে।
ইমিগ্রেশন আইনজীবীরা বলছেন এমন নির্দেশনা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নজিরবিহীন।
একদিকে ডি—ন্যাচারালাইজেশন প্রক্রিয়া নিয়ে বিচার বিভাগের সক্রিয়তা।
অন্যদিকে প্রেসিডেন্টের বক্তব্যে যাঁরা নিজেদের নিরাপদ মনে করতেন, তাঁরাও এখন আতঙ্কে।
এ বি সি নিউজ তাদের প্রতিবেদনে একটি সরকারি মেমোর বরাতে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ডিন্যাচারালাইজেশন বা নাগরিকত্ব বাতিলের প্রক্রিয়া জোরদার করছে।
সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ব্রেট শুমেট স্বাক্ষরিত ওই মেমোতে বলা হয়, যেসকল ব্যক্তির বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা, মানবপাচার, যুদ্ধাপরাধসহ যেসব অপরাধের প্রমাণ মিলবে, সেসব ক্ষেত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের মামলা করা যাবে।
তবে শুধু গুরুতর অপরাধ নয়, এই মেমোতে আরও বলা হয়েছে, এমন সব মামলাও এগিয়ে নেওয়া যাবে, যেগুলোর মধ্যে নাগরিকত্ব গ্রহণের সময় তথ্য গোপন, কাগজপত্রে ত্রুটি বা অন্যান্য প্রক্রিয়াগত ভুল রয়েছে। অর্থাৎ, মাত্রাতিরিক্ত প্রশাসনিক ত্রুটিও এখন নাগরিকত্ব হারানোর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
মেমোটিতে বিচার বিভাগের নতুন চার অগ্রাধিকার কথা বলা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে: ইহুদি বিদ্বেষ বন্ধ করা, স্যাঙ্কচুয়ারি স্টেট ও সিটিগুলোর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ, প্রয়োজনে ডিন্যাচারালাইজেশন চালানো এবং প্রশাসনের অভিবাসন নীতিকে পূর্ণ বাস্তবায়ন করা।
ইমিগ্র্যাশন বিশেষ্জ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন সময়ে অ্যাসাইলামের মাধ্যমে বা ইমিগ্রেশন সুবিধায় ন্যাচারালাইজড সিটিজেনশীপ পেয়েছেন তাদের মধ্যে যারা আমেরিকার স্বার্থপরিপন্থী এবং ট্রাম্প প্রশাসনের বিরোধী কার্যকলাপে সক্রিয় রয়েছেন এমন লাখো অভিবাসীদের ন্যাচারালাইজড প্রক্রিয়া আবারো যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। এতে সামন্য ত্রুটি ধরা পড়লে নাগরিকত্ব বাতিল প্রক্রিয়া শুরু করবে সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষ।
এদিকে ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টা ইলন মাস্ক “বিগ বিউটিফুল বিল”—এর সমালোচনা করার প্রতিক্রিয়ায় বহিষ্কারের হুমকি দিয়ে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।”
এর পরদিন নিউ ইয়র্কের মেয়রপ্রার্থী মামদানিকে উদ্দেশ্য করে ট্রাম্প বলেন, “অনেকে বলছে, সে অবৈধভাবে এখানে আছে। আমরা সব দেখব।”
জবাবে মামদানি বলেন, “আমি কোনো আইন ভাঙিনি। তবু আমাকে নাগরিকত্ব বাতিল হুমকি দেওয়া হচ্ছে”।
১৯৯০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত গড়ে বছরে মাত্র ১১টি নাগরিকত্ব বাতিলের মামলা হয়েছে।
কিন্তু ২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রশাসনই ১৬০০টি মামলা তদন্তে পাঠায়।
বিশ্লেষকদের মতে, এই মনোভাব আমেরিকার সংবিধানের মৌলিক নাগরিক অধিকারকে হুমকির মুখে ফেলছে। রাজনৈতিক মতবিরোধের জন্য যদি একজন বৈধ নাগরিকের ওপর রাষ্ট্রের প্রতিশোধ চলে আসে, তবে তা শুধু অভিবাসন নয় গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের ভিত্তিতেই আঘাত।
আন্তর্জাতিক এর আরো খবর

৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ: ড. ইউনূসকে চিঠিতে আরো যা লিখলেন ট্রাম্প

ক্যাশ রেমিট্যান্স পাঠাতে দিতে হবে ১% ট্যাক্স

আশ্রয়প্রার্থীদের অশনিসংকেত: দ্রত বিতাড়নে ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ পরিকল্পনা

৫ মাস পর আইস আটককেন্দ্র থেকে মুক্ত হয়ে ওয়ার্দ সাকেইক / “শুধু জন্মসূত্রে রাষ্ট্রহীন এটাই ‘অপরাধ’ ছিল”

রুশ সেনাবাহিনীতে বিদেশিদের যোগদানের সুযোগ: আইনে সই করলেন পুতিন
