ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় শুধু ‘একটি দল’: জাপানে অধ্যাপক ড. ইউনূস

দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী বছরের জুনের মধ্যে সুষ্ঠু, অবাধ এবং বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরে নির্বাচনের দাবি করছে, তারা ততক্ষণ পর্যন্ত অপেক্ষাকরতে চাচ্ছেনা বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
যদিও ডক্টর ইউনুস কোন দলের নাম উল্লেখ করেননি। এরপরেও একটি বিশেষ দলের অতি-কথক কেন্দ্রীয় নেতারা বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার জাপানের টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে ৩০তম নিক্কেই ফোরামে 'এশিয়ার ভবিষ্যৎ'-এর উদ্বোধনী অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে বক্তৃতাকালে তিনি এই দাবি করেন।
ফোরামের প্রশ্নোত্তর পর্বের কথোপকথনটি পরে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিটিভিতে সম্প্রচারিত হয়। প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার তিনটি লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। প্রথমটি হচ্ছে সংস্কার, দ্বিতীয়টি হলো যারা অপরাধ করেছে (জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে) তাদের বিচার এবং তৃতীয়টি হলো নির্বাচন” ।
ড. ইউনূস বলেন, “নির্বাচন এ বছরের শেষে ডিসেম্বরে অথবা সর্বোচ্চ আগামী বছরের জুনে অনুষ্ঠিত হবে। সংস্কার কতটা সম্পন্ন করা হচ্ছে, পুরোপুরি তার ওপর নির্বাচন নির্ভর করবে”।
প্রফেসর ইউনূস বলেন, “আমরা যদি দেশকে আগের অবস্থায়, প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগের অবস্থায় রেখে যেতে চাই, তাহলে ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা বলতে পারি। আমরা যদি খুব তড়িঘড়ি করি, কিছু সংস্কার করি এবং অন্যান্য সংস্কারের জন্য অপেক্ষা করতে পারি, তাহলে আমরা এটা (নির্বাচন) ডিসেম্বরে করতে পারি। তবে আমাদের যদি ভালো সংস্কার দরকার হয়, তাহলে আমাদের আরও ছয় মাস অপেক্ষা করতে হবে”।
কিন্তু কিছু লোক সংস্কার ত্যাগ করে নির্বাচন শেষ করার কথা বলছেন, তখন ড. ইউনূস বলেন, “সব রাজনৈতিক দল নয়, শুধু একটি দল এটা বলছে।’ তিনি আরো বলের, তাঁর কোনো রাজনৈতিক অভিলাষ নেই। তিনি নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন”।
পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে তা নিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। এদিকে, বিদেশে প্রধান উপদেষ্টা এই মন্তব্য করেছেন।
অধ্যাপক ইউনূস নিক্কেই ফোরাম 'ফিউচার অফ এশিয়া'-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থায় সাম্প্রতিক পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, “গত বছর শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশে একটি পরিবর্তন ঘটেছে এবং এরপর তাঁর সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে”।
প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় বলেন, “আমরা আমাদের জনগণের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা পূরণে, ন্যায়বিচার, সমতা, স্বাধীনতা এবং জনগণের মর্যাদা নিশ্চিত করতে এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে শান্তিপূর্ণ রূপান্তরের লক্ষ্যে কাজ করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এটি আমাদের ভুলগুলো সংশোধন করার, নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার এবং একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার একটি সুযোগ”।
বহুমুখী অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশ তার ভূমিকা পালন করে চলেছে উল্লেখ করে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন যে, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা ও শান্তি প্রতিষ্ঠা মিশনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে এবং মানবিক কারণে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা দশ লক্ষ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তায় অবদান রাখছে। তিনি বলেন, বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি জনসংখ্যার আবাসস্থল এশিয়া অনিশ্চয়তার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে, তবে সম্ভাবনার কেন্দ্রবিন্দুতেও রয়েছে।
আরও পড়ুন- ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন: জাপানে প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশ এর আরো খবর

পাচ্ছে 'দাঁড়িপাল্লা' প্রতীক / নিবন্ধন ফিরে পেলো বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী

হাসিনার বিরুদ্ধে বিচারকাজ সরাসরি সম্প্রচার হবে

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিশ্রুতি / ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন: জাপানে প্রধান উপদেষ্টা

নোবেল জয়ীর দৃঢ় প্রত্যয় / আমাকে দিয়ে দেশের কোনো অনিষ্ট হবে না: প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস
.png)
সাম্যের বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নতুন শপথবাক্য / শিক্ষার্থীদের ‘নতুন শপথবাক্য’ পাঠের প্রজ্ঞাপন জারি
