ওমানে বহুল প্রতীক্ষিত মার্কিন-ইরান বৈঠক, 'ন্যায্য চুক্তি' চায় ইরান

ওমানের রাজধানী মাস্কাটে ইরানের সাথে তার পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা শুরু হয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভিতে বলেছেন যে, তার দেশ একটি 'ন্যায্য চুক্তি' চায়। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে বিশ্বশক্তিগুলির দ্বারা ইরানের সাথে স্বাক্ষরিত ওবামা-আমাল পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে এসেছেন।
ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই বলেছেন যে, তিনি ইরানের সাথে আরও ভালো চুক্তি করবেন। তবে, ইরান এখনও পর্যন্ত পুরানো চুক্তির পরিবর্তে নতুন চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
বহু প্রতীক্ষিত ইরান-মার্কিন বৈঠকটি ইতিবাচক এবং গঠনমূলক হয়েছে। শনিবার মধ্যস্থতাকারী দেশ ওমানে বৈঠকের পর উভয় পক্ষই এমন মন্তব্য করেছে। ওয়াশিংটন এবং তেহরান আগামী সপ্তাহে দ্বিতীয় দফা আলোচনা করতে সম্মত হয়েছে।
কাতার-ভিত্তিক সম্প্রচারক আল-জাজিরার এক প্রতিবেদন অনুসারে, ওমানের রাজধানী মাস্কাটে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উভয় পক্ষের প্রতিনিধিরা একই কক্ষে একসাথে বসেননি। তারা দুটি পৃথক কক্ষে পরোক্ষ আলোচনা করেছেন। ইরান আগে বলেছিল যে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সরাসরি আলোচনায় অংশ নেবে না।
পরোক্ষ বৈঠকে প্রধান মধ্যস্থতাকারী ছিলেন ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর বিন হামাদ আল-বুসাইদি। তিনি উভয় পক্ষের মধ্যে তথ্য বিনিময় করেন। মার্কিন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং ইরানের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। ইরানের প্রতিনিধি দলে রাজনৈতিক বিষয়ক উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাজিদ তখত-রাভানচি, আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাজেম গারিব-আবাদি এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাভিও ছিলেন।
বৈঠকের শুরুতে, উভয় পক্ষকে একটি অবস্থান পত্র প্রস্তুত করতে বলা হয়েছিল, যাতে তারা আলোচনার মূল ক্ষেত্র এবং তাদের নিজস্ব সীমানা (লাল রেখা) নির্ধারণ করবে। এতে, ইরান জোর দিয়ে বলেছে যে, আলোচনার একমাত্র বিষয় হবে তার পারমাণবিক কর্মসূচি। তবে, দেশের সামরিক সক্ষমতা বা মধ্যপ্রাচ্যে তার প্রতিরক্ষা অঞ্চল নিয়ে কোনও আলোচনা হবে না।
বৈঠকের পর, হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। অত্যন্ত জটিল বিষয়ে উভয় পক্ষের স্বার্থ সমুন্নত রাখার জন্য উইটকফ বৈঠকে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন। উইটকফ বলেন আমরা সংকট সমাধানের এক ধাপ এগিয়ে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে, উভয় পক্ষই আগামী শনিবার আবার দেখা করতে সম্মত হয়েছে। যদিও ট্রাম্প এবং তার কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেছেন যে, আগামী শনিবার একই কক্ষে এবং মুখোমুখি আলোচনা হবে। তবে, তেহরান এখনও মুখোমুখি আলোচনার বিষয়ে তাদের অবস্থানে অনড়।
এদিকে, বৈঠকের পরেও, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের সতর্ক করেছেন। তিনি বলেছেন, "আমি চাই ইরান একটি চমৎকার এবং সুখী দেশ হয়ে উঠুক। কিন্তু তাদের পারমাণবিক অস্ত্র থাকতে পারে না। আমি তা মোটেও চাই না।"
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট এক বিবৃতিতে বলেছেন, "যদি ট্রাম্পের দাবি পূরণ না হয় ইরানকে ভারী মূল্য দিতে হবে।" তিনি আরও বলেন, "আমরা খুব স্পষ্ট করে দিয়েছি যে ইরান কখনই পারমাণবিক অস্ত্র রাখতে পারবে না।" "এবং সেই কারণেই এই বৈঠকটি বিশেষ।" ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাঘচি বলেছেন, "আমাদের উদ্দেশ্য হল সমান অবস্থান থেকে একটি ন্যায্য এবং সম্মানজনক চুক্তিতে পৌঁছানো। যদি অন্য পক্ষও একই অবস্থান থেকে আসে, তাহলে প্রাথমিক সমঝোতায় পৌঁছানোর সুযোগ থাকবে, যেখান থেকে আমরা আলোচনার পথে এগিয়ে যাব।"
আন্তর্জাতিক এর আরো খবর

নেতানিয়াহু ইসরায়েলের শত্রু, তাকে বন্দি করা উচিত: সাবেক সেনাপ্রধান

ভয়াবহ ধুলোঝড়ে শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত ইরাকের বহু মানুষ

২৩শে এপ্রিল থকে হজ পারমিট ছাড়া মক্কায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

ফিলিস্তিনের প্রতি অনন্য ভালোবাসায় সিলেটবাসী / হতাহতদের চিকিৎসা দিতে ফিলিস্তিন যেতে চান সিলেটের ১০০ নার্স

গণহত্যা আর অবৈধ দখলে মত্ত ইসরাইলি বর্বর বাহিনী / চারদিক থেকে রাফাহ ঘেরাও করে ফেলেছে অবৈধ দখলদার ইসরাইল
