গাজাবাসিদের গোপন হত্যার নতুন কৌশল ইসরাইলের
গাজার ত্রাণের বস্তায় মিশিয়ে দিচ্ছে বিষাক্ত নেশার বড়ি

মৃত্যুর শহর গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে। বর্বর সৈন্যরা ত্রাণ সহায়তার নামেও ক্ষুধার্ত মানুষের উপর তাদের গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা বোমা আর শুধু গুলি চালিয়েই ক্লান্ত হচ্ছে না। তারা গাজাবাসীদের হত্যার গোপন নতুন কৌশল অবলম্বন করে চলছে। ত্রাণের বস্তায় মিশিয়ে দিচ্ছে বিষাক্ত নেশার বড়ি।
গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস একটি গুরুতর অভিযোগ করেছে যে উপত্যকায় যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলি-সমর্থিত সাহায্য কেন্দ্রগুলি থেকে বিতরণ করা ত্রাণের আটার ব্যাগের ভিতরে 'অক্সিকোডোন'-সদৃশ মাদকদ্রব্যের বড়ি পাওয়া গেছে। তারা এই ঘটনার জন্য 'গভীর উদ্বেগ এবং নিন্দা' প্রকাশ করেছে।
তাদের অফিসিয়াল টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে, মিডিয়া অফিস বলেছে, 'আমরা এখন পর্যন্ত চারজন নাগরিকের সাক্ষ্য রেকর্ড করেছি যারা আটার ব্যাগের ভিতরে এই বড়িগুলি খুঁজে পেয়েছেন। আরও গুরুতর উদ্বেগের বিষয় হল যে, এই মাদকদ্রব্যগুলির কিছু ইচ্ছাকৃতভাবে চূর্ণ করা হয়েছিল বা ময়দার সাথে মিশ্রিত করা হয়েছিল, যা অপরাধের পরিধি বাড়িয়ে দেয় এবং এটিকে সরাসরি জনস্বাস্থ্যের লক্ষ্যবস্তুতে একটি গুরুতর আক্রমণে পরিণত করে।'
বিবৃতিতে সরাসরি ইসরায়েলকে এই ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, "আমরা ইসরায়েলি দখলদারিদেরকে আসক্তি ছড়িয়ে দেওয়ার এবং ফিলিস্তিনি সামাজিক কাঠামোকে ভেতর থেকে ধ্বংস করার এই জঘন্য অপরাধের জন্য সম্পূর্ণরূপে দায়ী করি, যা একটি নিয়মতান্ত্রিক নীতির অংশ এবং আমাদের ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে পরিচালিত গণহত্যার সম্প্রসারণ।"
মিডিয়া অফিস আরও দাবি করেছে যে, ইসরায়েল বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে মাদককে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। "ইসরায়েলি দখলদারদের বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে তাদের নোংরা যুদ্ধে মাদককে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার এবং অবরোধের মাধ্যমে এই পদার্থগুলিকে 'সহায়তা ও প্ররোচনা' হিসেবে পাচার করা যুদ্ধাপরাধ এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন" ।
এই অভিযোগ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে চলমান মানবিক সংকটে একটি নতুন এবং উদ্বেগজনক মাত্রা যোগ করেছে। এই অভিযোগের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েলের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
অক্সিকোডোন একটি ওষুধ যা সাধারণত ক্যান্সার রোগীদের দীর্ঘস্থায়ী তীব্র ব্যথা উপশম করতে ব্যবহৃত হয়। তবে, এটি অত্যন্ত আসক্তিকর এবং মারাত্মকও। এটি খাওয়ার ফলে শ্বাসকষ্ট, মানসিক বিভ্রান্তি এবং এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।
ঘটনাটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কয়েকটি ছবি প্রচারিত হয়েছে, যেখানে ময়দার ভেতরে ওষুধের ট্যাবলেট দেখা গেছে।
গাজার ফার্মাসিস্ট ওমর হামাদ এটিকে "গণহত্যার সবচেয়ে জঘন্য রূপ" বলে অভিহিত করেছেন। অন্যদিকে, গাজার ডাক্তার খলিল মাজেন আবু নাদা ফেসবুকে লিখেছেন, "এই ওষুধটি আমাদের সমাজকে ভেতর থেকে ধ্বংস করার একটি প্রচেষ্টা।"
গাজা মিডিয়া অফিস এই ভয়াবহ অপরাধের জন্য সম্পূর্ণরূপে ইসরায়েলকে দায়ী করে বলেছে, "ইসরায়েল অবরোধের সুযোগ নিয়ে গাজায় এই মাদক পাচার করছে সাহায্যের নামে। যা সাহায্য নয়, বরং মৃত্যু ফাঁদ।"
আন্তর্জাতিক এর আরো খবর

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ

আবারো ফোর্দো পরমাণু কেন্দ্রে নির্মাণকাজ শুরু করেছে ইরান

ফাঁস হওয়া ফোনালাপে বিক্ষুব্ধ জনতা / থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবিতে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মুখোশ উন্মোচন’ করে সরে দাঁড়ালেন উমামা ফাতেমা

ফিলিপাইনে ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্প
