ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতি: বাড়ছে অভিবাসীদের উৎকণ্ঠা
নিজস্ব প্রতিবেদক

যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতি ও ধরপাকড়ের কারণে অভিবাসীদের মধ্যে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা দিন দিন আরও বেড়েই চলেছে। অভিবাসীদের প্রতি ফেডারেল প্রশাসনের নজরদারী, অভিযান এবং আটকের মাত্রা বৃদ্ধিতে তাদের দৈনন্দিন স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি আলোচিত ঘটনায় এ উদ্বেগ আরো প্রকট হয়ে ওঠেছে।
শিকাগোসহ বেশ কয়েকটি সিটিতে লাতিন আমেরিকান সম্প্রদায়ের অনেক অনুষ্ঠান এবার বাতিল করেছে আয়োজকরা। শিকাগোর সিনকো দে মায়ো প্যারেড থেকে শুরু করে পিটসবার্গের স্থানীয় বিশ্বকাপ টুর্নামেন্ট সবই বন্ধ হয়ে গেছে। আয়োজকরা বলছেন, আইস কতৃর্ক গ্রেপ্তারের ঝুঁকি থাকায় মানুষ এখন প্রকাশ্যে এসব আয়োজনে যেতে ভয় পাচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ইমিগ্রেশন ক্র্যাকডাউনে বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর আটক ও নির্বাসনের ঘটনায় উদ্বেগ আরো প্রকট হয়েছে। ওয়াশিংটনে বসবাসরত নিউজিল্যান্ডের সারাহ শ’ এবং তার ছয় বছরের ছেলে, বৈধ নথি থাকা সত্ত্বেও, টেক্সাসে আটক রয়েছেন। আইনজীবীরা বলছেন, এটি প্রশাসনিক এক ভুলের কারণে তারা এমন অমানবিক ভোগান্তিতে পড়েছেন।
অন্যদিকে, গিনির নাগরিক ম্যানহাটনের একটি স্কুলের ছাত্র ২০ বছর বয়সী আশ্রয়প্রার্থী মামাদু মাক্তার দিয়ালো, আইসের হাতে আটক হয়ে ২৬ ফেডারেল প্লাজায় শুনানি শেষে কোর্ট লবি থেকে আইসের হাতে গ্রেপ্তার হোন পেনসিলভানিয়ার একটি কেন্দ্র পাঠানো হয়েছে।
আরও চাঞ্চল্য তৈরি করেছে লুইজিয়ানার একটি মামলা। মামলায় অভিযোগ করা হয়, আইস গোপনে দুই মা এবং চার শিশুকে হন্ডুরাসে পাঠিয়েছে। শিশুর মধ্যে তিনজন যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া নাগরিক এবং একজন স্টেজ—৪ ক্যান্সার আক্রান্ত। পরিবারগুলোর দাবি, তাদের কোনো আইনি সহায়তা বা যথাযথ শুনানির সুযোগ দেওয়া হয়নি। তবে আইস বলছে, তারা স্বেচ্ছায় গেছেন এবং গন্তব্য দেশে চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে।
ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস নতুন একটি বিশাল আটক কেন্দ্র স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন ‘ডিপোর্টেশন ডিপো’। প্রথমে এখানে ১,৩০০ এবং পরে ২,০০০ জন পর্যন্ত অভিবাসীকে আটক করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ রাজ্যের আরেকটি কেন্দ্র ‘অ্যালিগেটর আলকাট্রাজ’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে সমালোচনার ঝড় তুলেছে।
শুধু অবকাঠামো নয়, আইস জনবলও বাড়াচ্ছে। বয়সসীমা তুলে দিয়ে নতুন নিয়োগে বিপুল আবেদন পড়েছে মাত্র দুই সপ্তাহে ১ লাখ ১০ হাজার। প্রার্থীদের জন্য রয়েছে ৫০ হাজার ডলারের সাইনিং বোনাস এবং শিক্ষাঋণ মওকুফের প্রতিশ্রুতি।
তবে সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে আটক থাকা মানুষের ৭০ শতাংশেরই কোনো অপরাধমূলক রেকর্ড নেই, যা পুরো অভিযানের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
মেরিল্যান্ডের আইনপ্রণেতারা বাল্টিমোরের একটি আইস আটক কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। তাদের দাবি, অতিরিক্ত ভিড়, পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবার অভাব, গোসল ও কম্বল না দেওয়া এবং বন্দিদের যোগাযোগ সীমিত রাখা হয়েছে। কংগ্রেস সদস্য এবং সিনেটররা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং স্বচ্ছতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন।
সব মিলিয়ে, যুক্তরাষ্ট্রে কঠোর অভিবাসন নীতিতে এখন অস্থির এবং অনিশ্চয়তায় দিন পা করছে অভিবাসী পরিবারগুলো।
আন্তর্জাতিক এর আরো খবর

নিউইয়র্ক পুলিশের নিয়ন্ত্রন নেবে ফেডারেল সরকার: মোতায়েন করা হবে হাজারো ন্যাশনাল গার্ড - ট্রাম্পের ঘোষণা

ট্রাম্পের প্রাক্তন উপদেষ্টা বোলটনের বাড়িতে এফবিআই অভিযান

নিজ সন্তানকে হত্যা করে ভারতে পালানো আমেরিকান নারীকে আটক করল এফবিআই

সাড়ে ৫ কোটিরও বেশি বিদেশীর ভিসা খতিয়ে দেখবে ট্রাম্প প্রশাসন

মার্কিন সেনাবাহিনীতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শরিফুল এম খান
