December 7, 2024
ইসরাইলের যুদ্ধবিরতি, লেবাননের রাস্তায় বিজয়োল্লাস বাসিন্দাদের: রয়েছে সংশয়

ইসরাইলের যুদ্ধবিরতি, লেবাননের রাস্তায় বিজয়োল্লাস বাসিন্দাদের: রয়েছে সংশয়

ইসরাইলের যুদ্ধবিরতি, লেবাননের রাস্তায় বিজয়োল্লাস বাসিন্দাদের: রয়েছে সংশয়

ইসরাইলের যুদ্ধবিরতি, লেবাননের রাস্তায় বিজয়োল্লাস বাসিন্দাদের: রয়েছে সংশয়

অবশেষে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় লেবাননের হিজবুল্লাহ গ্রুপ এবং ইসরায়েলের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি প্রকাশ্যে আসছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ একটি যৌথ বিবৃতিতে যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্তাবলী তুলে ধরেছেন। তবে  পূর্ব অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে ইসরাইলের এই চুক্তিকে সন্দেহের চোখেও দেখেছেন অনেকেই।

বুধবার লন্ডন সময় ভোর ৪টায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হবে বলে ঘোষণা দেন দুই নেতা। এতে দুই দেশের মধ্যে এক বছরের বেশি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অবসান ঘটবে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে বক্তৃতা দেওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইসরাইল ও হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে নিয়েছে। তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্থায়ী হবে। বাইডেন আরও বলেছেন যে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে বুধবার লন্ডন সময় ভোর ৪টায়।

প্রায় ১৪ মাস পর ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ৬০ দিনের জন্য যুদ্ধ বন্ধ থাকবে। যদিও ইসরায়েলি সেনাদের লেবানন ছাড়ার কোনো খবর এখনো পাওয়া যায়নি। তবে লেবাননের বাসিন্দারা ইতিমধ্যেই যুদ্ধবিরতিকে বিজয় হিসেবে উদযাপন করতে শুরু করেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্যান্ডার্ড বুধবার (২৭ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ইসরাইল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণার পর লেবাননের বাস্তুচ্যুত বাসিন্দারা তাদের এলাকায় ফিরে যেতে শুরু করেছে। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী সতর্ক করেছে যে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত লেবানিজরা যেন নড়াচড়া না করে।

বুধবার বৈরুতে স্থানীয় সময় ভোর ৪টায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়, যা বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টায়। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ও হিজবুল্লাহ বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ স্থায়ীভাবে শেষ হবে কিনা তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।

বলা যায়, ইসরায়েলি সামরিক সতর্কতা উপেক্ষা করে বেসামরিক লোকজন মোটরসাইকেল ও গাড়িতে উপকূলীয় শহর টায়ারে ফিরতে শুরু করেছে। অনেককে দেখা গেছে মহা আনন্দে উল্লাস করতে, বিজয়ের চিহ্ন দেখাতে।

এদিকে, লেবাননের সেনাবাহিনী বুধবার বলেছে যে, তারা দেশের দক্ষিণে

সেনা  মোতায়েন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইসরায়েলি সৈন্য প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত সীমান্তের কাছাকাছি গ্রামের বাসিন্দাদের তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে বিলম্ব করতে বলেছে।

মঙ্গলবার হোয়াইট হাউস থেকে এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, মঙ্গলবারের যুদ্ধবিরতি চুক্তি গত বছর গাজা যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ নিহত হওয়া একটি সংঘাতের অবসানের পথ পরিষ্কার করে।

বাইডেন বলেছেন, স্থায়ীভাবে শত্রুতা শেষ করার পরিকল্পনায় চুক্তিটি করা হয়েছিল। হিজবুল্লাহসহ অন্য কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য আর হুমকি দিতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, ৬০ দিনের মধ্যে পর্যায়ক্রমে ইসরায়েল তার সৈন্য প্রত্যাহার করবে। একই সঙ্গে লেবাননের সেনাবাহিনী সীমান্ত এলাকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করবে যাতে হিজবুল্লাহ পুনরায় সংগঠিত হতে না পারে।

এর আগে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছে যে, সে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুত এবং যে কোনও সীমালঙ্ঘনের জন্য জোরপূর্বক প্রতিক্রিয়া জানাবে।  , এবং ঘোষণা করে যে, ইসরায়েল আক্রমণ করার সম্পূর্ণ সামরিক স্বাধীনতা বজায় রাখবে।

এদিকে, মধ্যপ্রাচ্যের একজন বিশ্লেষক বলেছেন, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তি লেবাননে আনন্দ বয়ে আনলেও, ইসরায়েলিরা এখনো চুক্তি নিয়ে সন্দিহান। কারণ একটি ইসরায়েলি নিউজ চ্যানেল দ্বারা পরিচালিত একটি জরিপে দেখা গেছে যে মাত্র ৩৭ শতাংশ ইসরায়েলি চুক্তির পক্ষে ভোট দিয়েছে। যদিও এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে আসা সংঘাতে লেবাননের ১২ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

হোয়াইট হাউসের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন যে, হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে চুক্তি যাতে লঙ্ঘন না হয় তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র লেবাননের সেনাবাহিনীর সাথে কাজ করবে। তবে এ অঞ্চলে কোনো মার্কিন সেনা মোতায়েন করা হবে না।

এদিকে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টও এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘এই চুক্তিটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’ কারণ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।

আরো পড়তে

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X