গাজার পর লেবাননে নৃশংসতা চালাচ্ছে ইসরাইল
ইসরাইল লেবাননের রাজধানী বৈরুতে নৃশংসতায় লিপ্ত হয়েছে, বিশ্ব নেতাদের যুদ্ধবিরতির আহ্বানকে থামিয়ে দিয়েছে তারা। তারা একের পর এক আবাসিক ভবনে বোমাবর্ষণ করে এবং ধ্বংসযজ্ঞ ও হত্যাকাণ্ড ঘটায়। একের পর এক দালান ভেঙ্গে মাটিতে মিশে গেছে। এতে দারিদ্র্যপীড়িত দেশটির অবর্ণনীয় ক্ষতি হচ্ছে। শুক্রবার রাতে তারা বেপরোয়া হামলা চালিয়েছে। অনেক মানুষ নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে কত মানুষ আটকে আছে, কত লাশ তার নিচে চাপা পড়েছে তা কেউ বলতে পারে না। এর মধ্যে রয়েছে শিশু, নারী ও বৃদ্ধ।
সোমবার থেকে শুরু হওয়া হামলায় অন্তত ৭০০ মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এই সংখ্যাটি পুরোপুরি সঠিক নয়। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মুস্তফা ইসরাইলকে দুর্বৃত্ত রাষ্ট্র বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন,গাজায় যুদ্ধাপরাধ, পশ্চিম তীরে দখলদারিত্ব এবং লেবাননের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য তাদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে, । গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলায় নিহতের সংখ্যা ৪১,৫৩৪ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে, ইসরায়েল লেবাননে সম্ভাব্য স্থল আক্রমণ চালানোর জন্য গত সপ্তাহের শুরুতে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে দুটি ব্যাটালিয়ন সেনা পাঠায়।
সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করার জন্য তারা আরও তিনটি রিজার্ভ ব্যাটালিয়ন পাঠায়। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন লেবাননে ইসরায়েলের স্থল হামলার বিষয়ে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন, ইসরাইলকে স্থল হামলা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ, এই যুদ্ধ পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এটি আরও বড় আকার নিতে পারে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে যে, তাদের যুদ্ধবিমান লেবাননের বেকা উপত্যকায় হিজবুল্লাহর কয়েক ডজন অবস্থান লক্ষ্য করেছে।
এ ছাড়া তারা দক্ষিণ লেবাননের বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালায়। এখনো হামলা অব্যাহত রয়েছে। তবে লেবাননের আল জাজিরার একজন সাংবাদিক বলেছেন, হামলাটি এমন বিল্ডিংয়ে করা হয়েছে যেখানে বেসামরিক মানুষ বাস করে। অন্যদিকে ইসরায়েলের দাবি, হিজবুল্লাহ এসব ভবনে অস্ত্র মজুত করছে। শুক্রবার রাতে ও পরবর্তী হামলায় কতজন আহত হয়েছেন তা জানা যায়নি। শনিবার সকালেও যুদ্ধবিমান প্রচণ্ড হামলা চালায় ইসরায়েল।
অন্যদিকে হিজবুল্লাহর কাছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মতো অত্যাধুনিক অস্ত্র নেই। তারা টেলিগ্রাম চ্যানেলে এক বিবৃতিতে বলেছে যে, তারা ইসরায়েলে দুটি হামলা চালিয়েছে। তারা জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব ইসরায়েলের হাইফা শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে রামাত ডেভিড এয়ারবেসে একটি ফাদি-৩ ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছে। ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, হাইফাকে ঘিরে দুটি শহরে আকাশ থেকে সাইরেন বেজেছে।
অন্যদিকে লেবাননের বেকা উপত্যকা থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক বলেছেন যে বেকা উপত্যকাকে হিজবুল্লাহর শক্ত ঘাঁটি বলে মনে করা হয়। ফলে সবার দৃষ্টি এখন সেদিকে। বেকা উপত্যকা পূর্ব ও পশ্চিম পর্বতমালার মধ্যে অবস্থিত। এর পরেই রয়েছে সিরিয়া। ধারণা করা হচ্ছে, সিরিয়া থেকে হিজবুল্লাহকে অস্ত্র সরবরাহ করা হতে পারে।