যাকাত দিতে হবে কেন?
বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জাকাতের সম্পদের পরিমাণ ১০ লাখ কোটি টাকা। আড়াই শতাংশ হারে যাকাতের পরিমাণ ২৫ হাজার কোটি টাকা। যদি ২৫ হাজার কোটি টাকার পরিবর্তে বছরে ১২ হাজার কোটি টাকাও জাকাত সংগ্রহ করা হয়, তাহলে প্রতিটি ১০০ কোটি টাকা দিয়ে ১২০ টি সমন্বিত ফলজ, বনজ, মৎস্য ও পশুসম্পদ প্রকল্প হাতে নেওয়া যেতে পারে।প্রতি বছর ১২০থেকে ১০ বছরে ১২০০ প্রকল্প এবং বছরের পর বছর এই বৃদ্ধি আমাদের দেশ থেকে দারিদ্র্যকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করবে। দেশের সকল যাকাত গ্রহীতাকে যাকাতদাতা হিসেবে রূপান্তরিত করা যাবে।
সম্মিলিতভাবে যাকাত আদায় করা গেলে আগামী ১৫ বছরের মধ্যে এ লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।
যাকাত ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি। একজন পরিপক্ক বিবেকবান মুসলমানের জন্য যাকাত ফ্যরজ যদি সে তার নিজের প্রয়োজন মেটানোর পর এক চান্দ্র বছরের জন্য অতিরিক্ত সাড়ে সাত তোলা সোনা বা সাড়ে ৫২ তোলা রূপা বা সমপরিমাণ জমা করে। যাকাত কোন করুণা বা দয়া নয়; বরং ধনীদের সম্পদে বঞ্চিতদের অধিকার।
যাকাত সমাজের অভাবীকে সমৃদ্ধ করে এবং অর্থনীতিকে গতিশীল করে। পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির চর্চা বাড়ায়। যাকাত প্রদানই মুমিনের পরিচয়। কোরআন বারবার একজন বিশ্বাসীর পরিচয় বর্ণনা করে বলেছে যে, -তারা নামায কায়েম করে এবং যাকাত দেয়।
যাকাত আদায়ের আসল লক্ষ্য হওয়া উচিত যাকাত গ্রহীতা , ব্যক্তি বা পরিবারকে স্বাবলম্বী করে তোলা, যাতে একদিন তারা নিজেরাও যাকাতদাতা হয়ে ওঠে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, “যারা ঈমানদার তারা সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং পরকালের জবাবদিহিতে বিশ্বাস করে। (সূরা নামল: ৩)
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে নবী, আপনি তাদের ধনসম্পত্তি থেকে জাকাত গ্রহণ করে তাদের পবিত্র ও পরিশুদ্ধির পথে এগিয়ে দিন। আপনি তাদের জন্য দোয়া করুন এবং আপনার দোয়া তাদের অন্তরকে প্রশান্ত করবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব শোনেন, সব জানেন।’ (সূরা তাওবা: ১০৩ )
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হুজুর (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তার সম্পদের যাকাত দেবে, তার সম্পদের দোষত্রুটি দূর হয়ে যাবে। (মুসলিম)
যাকাত সঠিকভাবে আদায় করে সুষ্ঠু ও পরিকল্পিতভাবে বিতরণ করলে সমাজে দারিদ্র্য থাকবে না। কোথাও কাউকে হাত পাততে হবে না। দেশ গরীব থাকবেনা না, দেশের মানুষও গরীব হবে না।