প্রথম ম্যাচে ডাচদের সাথে জয় টাইগারদেরঃ ১৫ বছর পর মূল পর্বে জয়
দেখতে দেখতে ১৫টি বছর পার হয়ে গেছে। ২০০৭ সালের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে শুভ সূচনা করেছিল। সেইটাই প্রথম, যেন সেটাই ছিল শেষ অবশেষে সেই আক্ষেপ, সেই জয়ের খরা ঘুচলো বাংলাদেশের। বিশ্বকাপের মূল পর্বে ১৫ বছর পর বাংলাদেশ প্রথম জয়ের দেখো পেলো এবার নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে।
২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর আর মূল পর্বে জয়ের মুখ দেখেনি বাংলাদেশ। 8তম বিশ্বকাপে, টিম টাইগাররা সুপার টুয়েলভে নেদারল্যান্ডসকে ৯ রানে পরাজিত করে। হোবার্টে ডাচদের কাছে ১৪৫ রানের টার্গেট দেয় বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৩৫ রানে গুটিয়ে যায় স্কট এডওয়ার্ডসের দল।
১৪৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই বিপাকে পড়ে নেদারল্যান্ডস। তাসকিন আহমেদের করা প্রথম ওভারের প্রথম দুই বলে দুই উইকেট হারায় ডাচরা। ইনিংসের প্রথম বলেই দুর্দান্ত আউট সুইংয়ে ব্যাটসম্যানদের পরাস্ত করেন অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বরাবরই দুর্দান্ত খেলা তাসকিন। প্রথম স্লিপে ইয়াসির রাব্বিকে ক্যাচ দেন বিক্রম সিং। দুর্দান্ত ক্যাচ দিয়ে দলকে খুশি করেন ইয়াসির।
দ্বিতীয় বলে উইকেট নিয়ে আবারও দলকে খুশি করেন তাসকিন। হালকা বাউন্সে পরাস্ত করেন বাস ডি লিডকে। সোহানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন লিড।
দ্বিতীয় ইনিংসের চতুর্থ ওভারে সাকিব বল হাতে নিয়ে ম্যাক্স ও’ডাউডকে ছক্কা হাঁকান। পরের বলে ও’ডাউড তার দ্বিতীয় রান নিতে গেলে কলিন অ্যাকারম্যান তাকে ফিরে যেতে বলেন। ততক্ষণে আফিফ হোসেনের থ্রো থেকে নন-স্ট্রাইকে স্টাম্প ভেঙে দেন সাকিব। ও’ডাউড ৮ রান করে বিদায় নেন।
চতুর্থ বলে রান আউট হন টম কুপার (০) । তৃতীয় রান নিতে গিয়ে স্ট্রাইকিং এন্ডে নাজমুল হোসেন শান্তর থ্রোতে রানআউট হন কুপার।
এর আগে বাংলাদেশ দলের দুই ওপেনারের বিদায়ের পর বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ মিশে যেতে থাকে। তবে মিডল অর্ডারে আফিফের ধৈর্যশীল ব্যাটিং এবং মোসাদ্দেকের ঝড়ে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ দলকে ১৪৫ রানের চ্যালেঞ্জিং টার্গেট দেয়। নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৪ রান করে টাইগাররা।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) হোবার্টে টস জিতে নেদারল্যান্ডসের অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন। টস হেরে ব্যাট করতে আসেন সৌম্য সাকরকার ও নামজুল হোসেন শান্ত। সৌম্য ১০০ স্ট্রাইক রেটে রান করেছিলেন কিন্তু শীর্ষ প্রান্তে শান্তভাবে খেলেন। কিন্তু পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগেই ভ্যান মেকেরিনের বুক বরাবর বাউন্সের গতি বুঝতে ব্যর্থ হয়ে ক্যাচ ছেড়ে দেন সৌম্য।
১৪ বলে ১৪ রান করে ফিরে গেলে পরের ওভারে পঞ্চম স্টাম্প থেকে টিম প্রিংলের হাতে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে শান্তও ক্যাচ আউট হন। ২০ বলে ২৫ রান করে আউট হন এই ওপেনার। দুই ওপেনারকে হারানোর ধাক্কা সামলাতে পারেননি সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস।
১১ বলে ৯ রান করে ভ্যান বেককে পরাজিত করতে গিয়ে ৩০ গজের মধ্যেই ক্যাচ দেন লিটন। কিছুক্ষণ পর শালিজ আহমেদকে স্লোগান দিতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন সাকিবও। দশম ওভারে ইনিংসের প্রথম ছক্কা হাঁকান আফিফ হাঙ্কান। মেকেরিনের বলের লাইন না বুঝে বোল্ড হন ইয়াসির। এরপর আফিফকে সঙ্গ দিতে আসেন নুরুল হাসান। দুজন মিলে ধাক্কা সামলে দলকে নিয়ে যান সেঞ্চুরির ওপরে।
তাদের ব্যাটে আরও ৪৪ রান যোগ করে বাংলাদেশ। কিন্তু ১৮ তম ওভারে ব্যাস ডি লিড পিছনে খেলতে গিয়ে আউট হন সোহান। দলের ১২০ রানে ক্রিজে নামার পর মোসাদ্দেক জোড়া বাউন্ডারি মারেন। কিন্তু ওভারের শেষ বলে আফিফও উইকেটের পেছনে লিডের বলে আউট হন। ২৭ বলে ৩৮ রান করে আউট হন এই ব্যাটসম্যান। শেষ ১২ বলে বাংলাদেশের ১৫০ ছুঁয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু তাসকিন অর্ডার বাদ দিয়ে দ্রুত রান আউট হয়ে যান ফ্রেড ক্লাসেন।
শূন্য রানে ফিরে গেলে পরের ৩ বলে কোনো রান আসেনি। শেষ ওভারের প্রথম দুই বলে কোনো রান নেননি মোসাদ্দেক। কিন্তু তৃতীয় বলে তার ছক্কায় ১৪০ রানে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। শেষ তিন বলে একবার জীবন পাওয়ার পর আরও চার রান যোগ করেন এই ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশ ১৪৪ রানের পুঁজি পায়। ২০ রানে অপরাজিত থাকেন মোসাদ্দেক।